একের পর এক রেলওয়ে দুর্ঘটনা ভারতীয় রেল পরিবহন ব্যবস্থার যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বারবার। সম্প্রতি কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে যে দুর্ঘটনা ঘটেছে তাতে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। একই লাইনে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস এবং মালগাড়ি চলে আসার কারণে ঘটেছে এই ভয়ংকর দুর্ঘটনা। প্রাথমিকভাবে রেল সব দায় চাপানোর চেষ্টা করেছিল মালগাড়ির চালকের উপর। যিনি এই দুর্ঘটনায় মৃত। কিন্তু সত্যিই কি এই দায় মৃত মালগাড়ি চালকের ছিল?
রেল দুর্ঘটনার পর প্রাথমিকভাবে রেলের তরফ থেকে দাবী করা হয় মালগাড়ি চালক সিগন্যাল না মেনে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের লাইনে ঢুকে পড়ে পেছন থেকে ট্রেনকে ধাক্কা মারে। কিন্তু তদন্তের পর উঠে আসছে অন্য এক সত্যি। ওই দিন সকাল থেকেই রেলওয়ে সিগন্যালিং ব্যবস্থা ঠিকভাবে কাজ করছিল না। স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা ছিল অকেজো। তার ফলেই এই বিপত্তি।
ঘটনার দিন অর্থাৎ সোমবার ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে রাঙা পানি এবং চটেরহাটের মধ্যেকার স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল কাজ করছিল না। বেশ কিছু সিগন্যাল লাল হয়েছিল। কোন কোন সিগন্যালে লাল থাকা সত্ত্বেও এগোনো যাবে তা জানানোর জন্য কাগজের লিখিত অনুমতি দেওয়া হয়েছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস এবং মালগাড়ির চালক এবং ট্রেন ম্যানেজার তথা গার্ডকে।
রেলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে রাঙাপানি স্টেশন মাস্টার কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস এবং মালগাড়ি চালককে টিএ ৯১২ ফর্ম দিয়েছিলেন। সেই ফর্মে স্পষ্ট করে উল্লেখ ছিল কোন কোন সিগন্যাল লাল থাকা সত্ত্বেও এগুলো যাবে এবং কোথা থেকে কতটা পর্যন্ত এই অনুমতি থাকছে। তবে অন্য সব বিষয় সম্পর্কে নির্দেশ থাকলেও গাড়ির গতিবেগ কত থাকবে সেই নিয়ে কোনও নির্দেশ ছিল না অনুমতি পত্রে।
আরও পড়ুন : ট্রেন দুর্ঘটনায় মিলবে ১০ লক্ষ টাকার বীমা, টিকিট বুকিংয়ের সময় করুন শুধু এই একটি কাজ
আরও পড়ুন : আপনার ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার হলে কি করবেন? বিপদে পড়ার আগেই জেনে নিন
দুর্ঘটনার আগে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ধীরগতিতে চলছিল। কিন্তু মালগাড়ির গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ৭৮ কিলোমিটার। মালগাড়ি চালক কেন এত দ্রুত বেগে গাড়ি চালাচ্ছিলেন তার তদন্ত করছে রেল। অন্যদিকে এই দুর্ঘটনার তদন্তের জন্য কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি তৎপর হয়েছে। জিআরপি ডিএসপি বিনোদ ছেত্রীর নেতৃত্বে ৭ সদস্যের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল তথা সিট গঠন করেছে।