কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। মালগাড়ি এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের সংঘর্ষের ফলে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন বহু। কীভাবে, কার গাফিলতিতে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটলো তা নিয়ে তদন্ত চলছে এখন। আর সেই তদন্তের কাজে লাগবে ভারতীয় রেলের ব্ল্যাকবক্স। জানেন কী এই ব্যবস্থা?
বর্তমানে রেল দুর্ঘটনার তদন্তের কাজে লাগানো হচ্ছে ডেটা লগার, যাকে বলা যেতে পারে রেলের ব্ল্যাক বক্স। কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটলো তা বুঝতে অনেকটা সাহায্য করবে এই ডেটা লগার। এটা আসলে এক ধরনের বৈদ্যুতিন চিপ। অত্যাধুনিক রেকের চালকের কেবিনে স্পিডোমিটারে এই বৈদ্যুতিন চিপ বা ডেটা লগার বসানো থাকে। রেক চলাচলের শুরু থেকে কারশেডে ঢোকা পর্যন্ত সব তথ্য ডেটা লগারে সংরক্ষিত থাকে। অনেকটা ঠিক বিমানের ব্ল্যাকবক্সের মত।
কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পর রেলে তরফ থেকে প্রাথমিকভাবে দাবী করা হয় মালগাড়ির চালকের ভুলের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে ডেটা লগার চেক করে দেখা হবে রাঙাপানি স্টেশন থেকে পেপার সিগন্যাল নেওয়ার পর মালগাড়ি চালকের রেকের গতি কত ছিল। দুর্ঘটনার আগের মুহূর্তে প্রত্যেক সেকেন্ডের আপডেট পাওয়া যাবে ডেটা লগার থেকে।
বিমান দুর্ঘটনা ঘটলে যেমন ব্ল্যাকবক্স থেকে দুর্ঘটনার আসল কারণ খুঁজে পাওয়া সম্ভব তেমনই রেল দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে কাজে আসবে ডেটা লগার। প্রাথমিক তদন্ত থেকে জানা গিয়েছে রাঙাপানি স্টেশন পেরানোর পর মালগাড়ির গতিবেগ ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে ছিল। আচমকা তা বেড়ে ৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা হয়ে যায়। চালকের দোষে এই দুর্ঘটনা নাকি মালগাড়ি ব্রেক ফেল করেছিল তা জানা যাবে ডেটা লগার তদন্তের পর।
এদিকে আবার কেউ কেউ দাবি করছেন দুর্ঘটনার সময় মাল গাড়ির গতিবেগ ঘন্টায় ৮০ কিলোমিটার ছিল। যদি মাল গাড়ির গতিবেগ হঠাৎ করেই এত বেড়ে যায় তাহলে তাকে কেন সতর্ক করলেন না গেটম্যান সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ওইদিন ওই স্থানে দায়িত্বপ্রাপ্ত গেটম্যান অবশ্য জানিয়েছেন তিনি রেলের টেলিফোন লাইনে মালগাড়ির গতিবেগের কথা জানিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন : রেলের কবচ আসলে কী? দুর্ঘটনা থেকে এটা কীভাবে যাত্রীদের প্রাণ বাঁচায়?
আরও পড়ুন : ভারতীয় রেলের LHB কোচ কী? কেন কখনোই দুর্ঘটনা ঘটে না এই কামরায়?
আপাতত তদন্ত থেকে যা জানা যাচ্ছে দুর্ঘটনার দিন রেলের সিগন্যাল, অপারেটিং বিভাগ এবং রাঙাপানি স্টেশনের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ছিল। এখন দুর্ঘটনার আসল কারণ খুঁজে পেতে মরিয়া রেল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন। তবে কতদিনে তা প্রকাশ্যে আসবে তা বলা মুশকিল।