Up-Down Train : রেলে যারা যাতায়াত করেন তারা স্টেশনে ট্রেন আসা-যাওয়ার ঘোষণায় নিশ্চয়ই শুনেছেন কোনও ট্রেন আপ লাইনে আসছে। আবার কোনও ট্রেন ডাউন লাইনে আসছে। এই আপ এবং ডাউন লাইন সম্পর্কে অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা থাকে না। যার ফলে ভুল করে ভুল ট্রেনে উঠে পড়ে হয়রানির শিকার হন অনেকেই। আজকের এই প্রতিবেদন থেকে জানুন ট্রেনের আপ এবং ডাউন আসলে কী? কীভাবে বুঝবেন কোনটা আপ ট্রেন এবং কোনটা ডাউন ট্রেন?
আপ এবং ডাউন ট্রেন মানে কী?
ট্রেনের ক্ষেত্রে আপ এবং ডাউন মানে উপর ও নিচে নয়। আপ ট্রেন বলতে বোঝায় ট্রেনটি গন্তব্য বা শেষ স্টেশন থেকে হোম স্টেশনের দিকে ফিরছে। ডাউন ট্রেন বলতে বোঝায় ট্রেনটি হোম স্টেশন থেকে গন্তব্যের দিকে এগোচ্ছে।
যেমন ধরুন, হাওড়া-তারকেশ্বর লোকাল ট্রেনটি হাওড়া থেকে ছাড়বে মানে হাওড়া এর হোম স্টেশন। যদি ট্রেনটি হাওড়া থেকে তারকেশ্বরের দিকে রওনা দেয় তার মানে ট্রেনটি ডাউন লাইনে আছে। তখন তাকে বলা হবে ‘ডাউন হাওড়া তারকেশ্বর লোকাল ট্রেন’। আর যদি বলা হয় আপ তারকেশ্বর-হাওড়া লোকাল তার মানে ট্রেনটি তারকেশ্বর থেকে হাওড়াতে আসছে।
অর্থাৎ ট্রেন যখনই তার হোম স্টেশন ছেড়ে ডেস্টিনেশনের দিকে এগোয় তখন সেটি ডাউন হয়ে যায়। আর ডেস্টিনেশন থেকে হোম স্টেশনে ফিরলে তখন সেটি আপ হয়ে থাকে। এখন যদি স্টেশনে ঘোষণা না করা হয় কোনটা আপ আর কোনটা ডাউন কীভাবে বুঝবেন তাহলে?
আপ এবং ডাউন ট্রেন বুঝবেন কীভাবে?
যেকোনও ট্রেনের দুটি নম্বর হয়। এই দুটো নম্বরের শেষ ডিজিটের মধ্যে কেবল পার্থক্য থাকে। এই শেষ ডিজিট দেখলেই আপনি আপ কিংবা ডাউন বুঝতে পারবেন। যেমন ধরুন, নিউ দিল্লী-ভোপাল শতাব্দী ট্রেনের নম্বর দুটি ২০০১ (ডাউন) ও ২০০২ (আপ)। যদি লেখা থাকে ২০০১ তাহলে এর অর্থ ট্রেনটি দিল্লি থেকে ভোপালের দিকে যাচ্ছে। অর্থাৎ এটি ডাউনলাইনে চলছে। আর যদি ২০০২ সংখ্যাটি লেখা থাকে তার মানে ট্রেনটি ভোপাল থেকে নিউ দিল্লিতে ফিরছে। অর্থাৎ ট্রেনটি এখন আপ লাইনে আছে।
আরও পড়ুন : ভারতের সবথেকে বিপদজনক জায়গা, যেখানে ভারতীয়দেরই প্রবেশ নিষিদ্ধ
ভারতীয় রেলের আপ এবং ডাউনের ইতিহাস
১৯৫১ সালের আগে ভারতে রেল ব্যবস্থা ৪২ টি ভাগে বিভক্ত ছিল। যার মধ্যে মুম্বাই, কলকাতা এবং মাদ্রাজ ছিল দেশের তিনটি প্রধান বন্দর। ট্রেন যখন এই তিনটি প্রধান বন্দর থেকে গন্তব্যের দিকে যেত তখন তাকে আপ বলা হত। আর গন্তব্য থেকে ফিরলে ডাউন বলা হত। কিন্তু ১৯৫১ সালের পর নিয়ম বদলে যায়।
আরও পড়ুন : গঙ্গার নিচে মেট্রো আটকে গেলে কী হবে? কীভাবে বেরোবেন যাত্রীরা?
ট্রেনের ‘আপ’ এবং ‘ডাউন’ দিক কীভাবে নির্ধারণ করা হয়?
১৯৫১ সালে রেলের সংযুক্তিকরণ হয়। তখন আপ এবং ডাউন ট্রেন ধরা হতো সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সেই ট্রেনের উচ্চতা বা অক্ষাংশের ভিত্তিতে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কম উচ্চতার স্টেশনের দিকে এগোলে ট্রেনটিকে ডাউন ট্রেন বলা হত। আবার সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বেশি উচ্চতার দিকে ট্রেন গেলে তাকে আপ ট্রেন বলা হত। যেমন দিল্লি-হাওড়া ট্রেন যদি দিল্লি থেকে হাওড়ার পথে আসে তাহলে সেটা হবে ডাউন। উল্টোদিকে হাওড়া থেকে দিল্লির পথে এগোলে তাকে আপ বলা হবে।