শুধু ঘোরার জন্য নয়, এখন পাহাড়ে বেশিরভাগই যান ট্রেকিং করার জন্য। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন পাহাড়ে ট্রেকিং করার ব্যবস্থা আছে। যারা নিয়মিত ট্রেকিং করেন তারা কার্যত অভ্যস্ত এসবে। কিন্তু যাদের সেই অভ্যাস নেই, প্রথমবারের মত ট্রেকিং করছেন, কিংবা কোনও দুর্গম স্থানে ট্রেকিং করার কথা ভাবছেন তারা অবশ্যই আগেভাগে প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন। ট্রেকিং করার আগে কোন কোন বিষয়ে সতর্কতা নেবেন? কী কী করবেন? কী কী করবেন না জেনে নিন।
ফিটনেসের উপর নজর দিন
ট্রেকিং করার জন্য মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর নজর দিতে হবে। মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে দুর্গম পরিস্থিতির মোকাবেলা করার জন্য। সেই সঙ্গে শারীরিকভাবে সবল হতে হবে। অসুস্থ শরীরে ট্রেকিং না করাই ভালো। নিয়মিত শরীরচর্চাও করতে হবে। সেই সঙ্গে কার্ডিও, স্ট্রেনথ ট্রেনিং চলবে।
মানসিকভাবে সাহসী হন
শুধু ট্রেকিং করার অদম্য ইচ্ছে মনের মধ্যে পোষণ করলেই চলবে না। মনে মনে ভীষণ সাহসী হতে হবে। দুর্গম পরিস্থিতির মোকাবিলা করার সামর্থ্য থাকতে হবে। হঠাৎ বিপদে পড়লে মাথা ঠান্ডা রেখে সমস্যার সমাধান খোঁজার চেষ্টা করতে হবে। তার জন্য প্রয়োজন মানসিক দৃঢ়তা।
সঙ্গে রাখুন এইসব জিনিস
ট্রেকিং করার সময় সঙ্গে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস রাখতেই হবে। যেমন ব্যাকপ্যাক সঙ্গে থাকবে। তাবু এবং লাঠি থাকবে সঙ্গে। লক্ষ্য রাখতে হবে ব্যাকপ্যাক যেন খুব বেশি ভারী না হয়ে যায়।
কেমন পোশাক পরবেন?
পাহাড়ে যত উপরে উঠবেন তত বেশি ঠান্ডা লাগবে। সেই অনুযায়ী গরম পোশাক পরতে হবে। আর পাহাড়ের উপর ওঠার সময় জুতোর ফিতে ঢিলে রাখতে হয়। নিচে নামার সময় জুতো টাইট করে বাঁধতে হয়।
কেমন খাবার খাবেন?
ট্রেকিং শুরু করার আগে অন্তত এক মাস খাওয়া-দাওয়ার দিকে নজর দিতে হবে। ৮ থেকে ১০ হাজার ফুট উপরে ওঠার পরিকল্পনা যদি থাকে তাহলে রোজ বেশি করে হাই ক্যালরিযুক্ত খাবার রাখতে হবে। বেশি করে জল পান করতে হবে এনার্জি পাওয়ার জন্য। সেই সঙ্গে কিসমিস, খেজুর, কাজু, আমান্ড খেতে হবে।
সঙ্গে কোন কোন ওষুধ রাখবেন?
ট্রেকিং করার জন্য নিজের সঙ্গে অবশ্যই কিছু ওষুধ রাখুন। যেমন ন্যাজাল ড্রপ, ওআরএস, পেট খারাপের ওষুধ এবং জ্বরের ওষুধ। এছাড়া ক্রেপ ব্যান্ডেজ, নি ক্যাপ রাখতে হবে সঙ্গে। ব্যথার জন্য বাম কিংবা স্প্রে রাখতে পারেন।
সঙ্গে আর কী কী রাখবেন?
একটি ছোট ডাইরিতে কিংবা নোটবুকে সমস্ত জরুরী ফোন নম্বর লিখে নিন। নিজের পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখুন। সঙ্গে কিছু শুকনো খাবার রাখুন। জলের বোতল রাখতে হবে। জল শোধনের ট্যাবলেট রাখতে হবে। পাহাড়ি জায়গাতে যেখানে সেখান থেকে খাবার জল নিলে তার সঙ্গে জল শোধনের ট্যাবলেট অবশ্যই মিশিয়ে নেবেন। মশা ও পোকামাকড়ের হাত থেকে বাঁচতে ইনসেক্ট রিপিলেন্ট সঙ্গে নিতে ভুলবেন না।
আরও পড়ুন : জেনারেল টিকিটে AC-তে চাপলে শাস্তি কী? জানলে আর এই ভুল করবেন না
আরও পড়ুন : ১২ টার সময়েই কেন হোটেল চেক আউট করতে হয়? ৯৯% মানুষ জানেন না
ট্রেকিংয়ের সময় কী কী করবেন না?
কোনও নেতিবাচক চিন্তা মাথায় আনবেন না। এক টানা অনেকক্ষণ পাহাড়ের পথে হাঁটবেন না। পাহাড়ে ওঠার সময় দেখতে হবে যাতে পায়ের গোড়ালি আগে মাটি স্পর্শ করে। তারপর যেন পায়ের পাতা পরে। এতে মেরুদন্ডের উপর চাপ কম পড়বে। ৩০ মিনিট হাঁটার পর একটু করে থেমে দম নেবেন। ঘন ঘন নিঃশ্বাস নেবেন। আশেপাশের জায়গাগুলো ভালোভাবে দেখবেন। তারপর আবার যাত্রা শুরু করলে কষ্ট হবে না।