সিকিম যাওয়ার আদর্শ সময় কোনটি? কী কী দেখবেন? কীভাবে যাবেন?

Published on:

Sikkim Tour Info Tourist Spots Route Map Know Details

Sikkim Tour Info : পাহাড়প্রেমীদের কাছে সিকিম যেন আলাদাই এক স্বর্গরাজ্য। দেশ-বিদেশ থেকে বহু মানুষ ভারতের এই ছোট্ট রাজ্যে ঘুরতে আসেন। আয়তনে ছোট্ট হলেও সিকিমে কিন্তু দেখার জায়গা প্রচুর রয়েছে। সারা বছরই তাই ভিড় লেগে থাকে পর্যটকদের। আজকের এই প্রতিবেদনে জানুন সিকিমে আপনি কী কী দর্শনীয় স্থান পাবেন। সিকিম ভ্রমণের আদর্শ সময় কোনটি? কীভাবে যাবেন। জানুন সবিস্তারে।

সিকিম ভ্রমণের আদর্শ সময় কোনটি?

গরমের মরসুম : যদি গরমে সিকিম ভ্রমণের পরিকল্পনা করে থাকেন তাহলে মার্চ থেকে মে মাস হবে বেড়ানোর আদর্শ সময়। এই সময় আপনি দেখবেন,

  • রঙিন ফুলে ভরা গাছপালা,
  • মনোরম আবহাওয়া,
  • রডোডেনড্রন ফুলের গুচ্ছ,
  • পরিষ্কার আকাশের মাঝে কাঞ্চনজঙ্ঘা,
  • অর্কিড ও নানা ফুলের সমাহার,
  • রং-বেরঙের পাখি,

শীতের মরসুম : শীতকালে ভ্রমণের পরিকল্পনা থাকলে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসে যান। আরও বেশি শীত অনুভব করতে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে যেতে হবে। শীতের সিকিমে আপনি দেখবেন,

  • বরফে ঘেরা পাহাড়,
  • রেড পান্ডা উইন্টার ফেস্টিভ্যাল,
  • টেমি টি অটাম চেরি ফেস্টিভ্যাল, গুরুদোংমার, চোলামু এবং ছাঙ্গুর মত হ্রদের উপর বরফের পুরু আস্তরণ।
  • রোপওয়ে রাইড থেকে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে তুষারঢাকা পাহাড়ের দৃশ্য।

বর্ষার মরসুম : জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সিকিমে ভারী বৃষ্টি চলে। বর্ষায় পাহাড়ি রাস্তা বিপজ্জনক হয়। এই সময়টা তাই না যাওয়াটাই ভাল। তবে এই সময় কিন্তু হোটেলের ভাড়া কম থাকে।

Gangtok

সিকিমে গিয়ে কী কী দেখবেন?

গ্যাংটক

সিকিমের রাজধানীর গ্যাংটকে (Gangtok) দর্শনীয় স্থানের পাশাপাশি ক্যাম্পিং, রোপওয়ে, রাফটিং, ট্রেকিং, হাইকিং এর মত অনেক আকর্ষণীয় সুবিধা পাবেন। এখানে দেখার মত স্থান গুলি হল –

  • তাশি ভিউ পয়েন্ট থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং আশেপাশের পাহাড় দেখতে পাবেন,
  • নামগাল ইনস্টিটিউট অফ তিব্বতোলজি জাদুঘরে বৌদ্ধমূর্তি, লাইব্রেরি, রিসার্চ সেন্টার, বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের ধার্মিক জীবনযাপন,
  • হনুমান টক মন্দির,
  • বান ঝাকরি ফলস,
  • সিকিম হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্ক,
  • রুমটেক মনাস্ট্রি,
  • এনছে মনাস্ট্রী,
  • নাথুলা, এখানে ভ্রমণের সময় আলাদা করে পারমিশন নিতে হয়। তার জন্য সঙ্গে ফটো আইডি এবং ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।
  • রিডজ ফ্লাওয়ার পার্ক,
  • সারামসা গার্ডেন,
  • লহাসা ফলস,
  • রাঙ্কা মনাস্ট্রী,
  • MG মার্গ,
  • বাবা হরভজন সিংহ মেমোরিয়াল টেম্পল,
  • গ্যাংটক রোপওয়ে,
  • গনেশ টক ভিউ পয়েন্ট,
  • মেনেমেছো লেক,
  • ছোলামু লেক,
  • সেভেন সিস্টার্স ওয়াটরফলস,
  • দেওরালি অর্চিড স্যাংচুয়ারি,

PELLING

পেলিং

পেলিং হল পশ্চিম সিকিমের একটা ছোট্ট শহর। যার পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে রিম্বি নদী। এখানে অনেক দর্শনীয় স্থান আছে যেমন –

  • রিম্বি অরেঞ্জ গার্ডেনে এলাচ, কমলা, কাঠবাদাম গাছ দেখা যাবে।
  • কাঞ্চনজঙ্ঘা ফলস,
  • ট্রেকিং করতে পারেন রাবদেন্তসে রুইন্সে,
  • পেমায়াংতাসে মনাস্ট্রী,
  • সিঙ্গসোর ব্রিজ,
  • স্কাইওয়াক,
  • খেছিপরি লেক,
  • চেনরেজিগ মন্দির,
  • সাংহাই ফলস,

Lachung

লাচুং

তিব্বতের বর্ডারের কাছে অবস্থিত লাচুং গ্রাম। গ্যাংটক থেকে এখানে যেতে সাড়ে ৫ ঘন্টা সময় লাগে। এখানে দেখবেন

  • ইয়ামথাং ভ্যালি যাওয়ার পথে তিস্তা নদীর অপরূপ সৌন্দর্য,
  • আপেলের বাগান ঘেরা বৌদ্ধ লাচুং মঠ,
  • কাটাও মিডল পয়েন্ট, যাকে সিকিমের সুইজারল্যান্ড বলে,
  • ভিম নালা ফলস,
  • খান্দা ওয়াটার ফলস,
  • স্নো পয়েন্টে ট্রেকিং করতে পারবেন।

Lake Tsomgo

ছাঙ্গু লেক

গ্যাংটক থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ছাঙ্গু লেককে বরফের হ্রদ বলা হয়। গ্যাংটক পর্যন্ত গিয়েও ছাঙ্গু লেকে না যাওয়া মানেই পুরো ট্রিপটাই লস। বরফে ঘেরা পাহাড়ের মধ্যে বরফ নিয়ে খেলার আনন্দ পেতে পর্যটকরা এখানে আসেন।

ইয়ুকসোম

  • কাঞ্চনজঙ্ঘা ঝর্ণা,
  • ছোট ছোট অসংখ্য লেক বা হ্রদ,
  • বৌদ্ধ মন্দির,
  • হাইকিংয়ের সুবিধা রয়েছে,

এছাড়াও অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

ইয়ামথাং যাকে ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ারস বলে, লাচেন মনাস্ট্রি, রাভাঙলা বৌদ্ধ পার্ক, রাঙাল মনাস্ট্রি, সানরাইজ ভিউ পয়েন্ট, নামছি হিল টপ মনাস্ট্রি, চারধাম মন্দির, কাঞ্চনজঙ্ঘা ন্যাশনাল পার্ক, সিঙ্গালিলা ন্যাশনাল পার্ক, আরিতার লেক, ঋষি খোলা ফলস, জিরো পয়েন্ট, গুরুদংমার লেক, নাথাং ভ্যালি, টেমি টি গার্ডেন, , ভার্সে অভয়ারণ্য।

সিকিমে কীভাবে যাবেন?

  • বাসে গেলে শিলিগুড়ি পর্যন্ত যেতে হবে। তারপর সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া নিয়ে সরাসরি পৌঁছে যেতে পারবেন সিকিমের রাজধানী শহর গ্যাংটক। আবার শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটক রুটে বাসও চলাচল করে। তারপর সাইট সিইং এর জন্য গাড়ি ভাড়া নিতে হবে।
  • ট্রেনে করে গেলে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নামতে হবে। তারপর সেখান থেকে ট্যাক্সি কিংবা শেয়ারে জিপ ভাড়া করতে পারেন।
  • বিমানে গেলে বাগডোগরা এয়ারপোর্টে নামতে হবে। তারপর সেখান থেকে ট্যাক্সি করে সোজা গ্যাংটক যেতে পারবেন।