পাহাড়ি গ্রামের সৌন্দর্য এক কথায় অবর্ণনীয়। বিশেষ করে হিমালয় পর্বতের কোলে যে ছোট ছোট পাহাড়ি গ্রামগুলো রয়েছে সেগুলো যারা দেখেছেন তারাই কেবল অনুধাবন করতে পারবেন প্রকৃতি কতখানি সুন্দর হতে পারে। পাইন গাছের সারি, অর্কিড এবং চায়ের বাগান, তার মধ্যে মাথা তুলে আছে পাহাড়, পাহাড়ের চূড়ায় বরফ, দেখলে যেন মনে হয় পৃথিবীর বুকে এক ফালি স্বর্গ। আজ এই প্রতিবেদনে এমনই এক স্বর্গের হদিশ রইল।
পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিমের ঠিক সীমান্তে অবস্থিত ছোট্ট একটি সুন্দর গ্রামের নাম দেবরালি দারা। নেপালি ভাষায় দেবরালির অর্থ পবিত্র পর্বতের চূড়া। এবং দারা কথাটির অর্থ সুন্দর শিখর। যে জায়গার নাম এত সুন্দর সেই জায়গা নিজের চোখে দেখলে চোখ ফেরাতেই পারবেন না। তিস্তা নদীর তীরে অবস্থিত ছোট্ট সুন্দর অজানা এই গ্রাম।
তিস্তা নদীর একপাশে দেবরালি দারা ও অন্য পাশে রয়েছে সিকিমের মেল্লি। অর্থাৎ এই জায়গায় পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিমের সীমানা রয়েছে। যার মাঝখান দিয়ে বয়ে গিয়েছে তিস্তা নদী। দেবরালি দারার চূড়ায় রয়েছে মা শক্তির মন্দির। যার নাম সিংহবাহিনী ধাম। এই মন্দির ফুলের বাগানে সাজানো। মন্দিরে সবসময় একটা ঘিয়ের প্রদীপ জ্বলে। সন্ধ্যা আরতি দেখলে মন ভরে যাবে।
অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীরা স্বচ্ছন্দ্যে এখানে আসতে পারেন। কারণ এখানে ট্রেকিং করার সুবিধা পাবেন। অনেকে কালিম্পং থেকে ট্রেকিং করে এই জায়গাতে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। মাঝপথে হিমালা দারা, জলসা বাংলো, মহাদেব ধাম, হনুমান টোক পড়বে। আলপাইন গাছের জঙ্গল এবং তিস্তা নদীর মাঝ বরাবর পথ দিয়ে দেবরালি দারায় পৌঁছানোর মজাই আলাদা।
যদি কালিম্পং থেকে দেবরালি দারা গাড়িতে করে আসতে চান তাহলে ৪০ মিনিট সময় লাগবে। তবে হেঁটে আসলে পথের সৌন্দর্য সব থেকে ভালো বোঝা যাবে। কিন্তু এখানে আপনি কোনও টুরিস্ট লজ পাবেন না। এখান থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে রামধুরাতে কয়েকটা নেপালি হোমস্টে রয়েছে বটে কিন্তু সেগুলো ততটা ভালো নয়।
আরও পড়ুন : বর্ষায় ঘুরে আসুন মেঘেদের রাজ্য মেঘালয়! মিটে যাবে বিদেশ ভ্রমণের সাধ
আরও পড়ুন : মেঘের আড়ালে লুকিয়ে ছোট্ট গ্রাম! ভরা বর্ষায় ঘুরে আসুন সিকিমের এই অফবিট লোকেশন থেকে
অনেকে দার্জিলিং কিংবা কালিম্পং ঘুরতে গেলে দেবরালি দারা ঘুরে আসেন। সাদা কুয়াশা ভেদ করে যখন নির্জন পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে হাঁটবেন, নীল পাহাড়ের বিপরীতে তিস্তা নদীর অপূর্ব রূপ দেখবেন তখন মন বলবে এটাই তো স্বর্গ। এই জায়গা অ্যাডভেঞ্চার প্রেমী এবং প্রকৃতিপ্রেমীদের খুবই পছন্দের জায়গা।