কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পরপরই ভারতীয় রেলের তরফ থেকে দুর্ঘটনার দায় চাপানো হয়েছিল মৃত মালগাড়ি চালকের উপরে। যদিও মালগাড়ি চালকের উপর দোষ চাপানোকে কেন্দ্র করে পাল্টা আঙুল উঠেছিল রেলের দিকেই। অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন রাঙাপানি স্টেশন মাস্টারের দেওয়া কাগজের সিগন্যাল নিয়ে। এবার তদন্তে প্রকাশ্যে এলো সিগন্যাল সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
সম্প্রতি কাটিহারের ডিআরএম সুরেন্দ্র কুমার সংবাদমাধ্যমের কাছে জানিয়েছেন কাগজের সিগন্যালে কোনও ভুল ছিল না। তাহলে কীভাবে ঘটে গেল এই দুর্ঘটনা? সুরেন্দ্র কুমার স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছেন মালগাড়ির গতিবেগ বেশি থাকার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ওই সময় মালগাড়ির গতিবেগ ছিল ৫০-৬০ কিলোমিটার। কোথায় কোথাও বলা হচ্ছে ৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা বেগে ছুটছিল মালগাড়ি।
রাঙাপানি স্টেশনের লাইনে সিগন্যালের গন্ডগোল ছিল বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে। তাই কাগজের সিগন্যাল দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছিল। মালগাড়ির চালকের কাছে লাল সিগনাল অতিক্রম করার অনুমতি ছিল। তাকেও কাগজের সিগন্যাল দেওয়া হয়েছিল। তবে তাকে ধীরগতিতে গাড়ি এগিয়ে নিয়ে যেতে হত। কাজেই স্টেশন মাস্টারের এক্ষেত্রে কোনও দোষ দেখছে না রেল।
কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ও মালগাড়িকে ‘টিএ ৯১২’ ও ‘টি৩৬৯(৩বি)’ ফর্ম দেওয়া হয়েছিল। ‘টিএ ৯১২’ ফর্মে অর্থাৎ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের চালকের কাছে গতিবেগ সংক্রান্ত কোনও নির্দেশ ছিল না। তবে টি৩৬৯(৩বি)’ ফর্মে বলা ছিল ট্রেনের গতিবেগ কোনওভাবেই ১৫ কিলোমিটারের বেশি তোলা যাবে না। কিন্তু মাল গাড়ি চালক সেই নিয়ম মানেননি।
আরও পড়ুন : আপনার ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার হলে কি করবেন? বিপদে পড়ার আগেই জেনে নিন
আরও পড়ুন : ভারতীয় রেলের LHB কোচ কী? কেন কখনোই দুর্ঘটনা ঘটে না এই কামরায়?
সুরেন্দ্রকুমার আরও জানিয়েছেন এখনও পর্যন্ত এই ঘটনার তদন্তে ৩০ জনকে ডাকা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৬ জনের বয়ান রেকর্ড হয়েছে। যখন কোনও দুর্ঘটনা ঘটে তখন সঠিক তথ্য পেতে বেশ অসুবিধা হয়। প্রাথমিক তদন্তের উপর বিবৃতি দিয়েছিল রেল। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা ঠিক হবে না বলেছেন ডিআরএম।