মন্দিরের শহর বৃন্দাবন। ভারতবর্ষের মথুরা জেলার বৃন্দাবনে অনেক মন্দির রয়েছে। দেশ বিদেশ থেকে ভক্তরা এখানে আসেন ভগবানের কাছে প্রার্থনা করবেন বলে। এরই মাঝে একটি মন্দির রয়েছে যেখানে নাকি ঘন্টা বাজানো নিষিদ্ধ। হিন্দু ধর্মমতে কাসর-ঘন্টা বাজানো হয় ভগবানের আরতির সময়। কিন্তু বৃন্দাবনের বাঁকে বিহারী মন্দিরে তা নিষিদ্ধ। কেন জানেন?
বৃন্দাবন ধামের রমন রেতিতে রয়েছে বাঁকে বিহারী মন্দির। ১৮৬৪ সালে স্বামী হরিদাস ভগবান কৃষ্ণকে উৎসর্গ করে এই মন্দির গড়ে তুলেছিলেন। এই মন্দিরকে কেন্দ্র করে অনেক অলৌকিক গল্পকথা রয়েছে। রয়েছে কিছু অদ্ভুত অদ্ভুত নিয়ম। ভারতবর্ষের বড় বড় মন্দিরগুলোতে বড় বড় ঘন্টা রয়েছে। কিন্তু বাঁকে বিহারী মন্দিরে ঘন্টা বসানো হয়নি।
আসলে স্বামী হরিদাস তার আধ্যাত্মিক অনুশীলনের শক্তি কাজে লাগিয়ে নিধিবনে বসে বাঁকে বিহারীকে প্রকাশ করেছিলেন বলে লোক মুখে প্রচার রয়েছে। তিনি ছোট থেকেই বাঁকে বিহারীর ভক্ত ছিলেন। যখন আরতী করতেন তখন ঘন্টা বা তালি বাজাতেন না। তার প্রতিষ্ঠিত মন্দিরে তার নিয়মেই পুজো হয়ে আসছে বছরের পর বছর ধরে।
বৃন্দাবনের এই মন্দিরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে শিশুরূপে পূজা করা হয়। তার শিশুসুলভ স্বভাবের কথা ভেবেই মন্দিরে ঘন্টা রাখা হয়নি। আসলে ছোট শিশুরা ঘন্টার শব্দে কিংবা জোরে শব্দ হলে ভয় পেয়ে যায়। বাঁকে বিহারীর যাতে অসুবিধা না হয় তার জন্য এই ব্যবস্থা।
ঘন্টা না বাজানোর পাশাপাশি তালিও বাজানো হয় না এই মন্দিরে। জন্মাষ্টমী ছাড়া এই মন্দিরে মঙ্গল আরতি অর্থাৎ সকালের আরতি হয় না। অন্যান্য মন্দিরে যেখানে সারা দিনে ৪ বার আরতি হয় সেখানে এই মন্দিরে দিনে ৩ বার আরতি হয়।
আরও পড়ুন : এই মন্দিরে গেলেই ভেঙে যায় প্রেম! কাপলরা ভুলেও পা রাখবেন না এই অভিশপ্ত মন্দিরে
আরও পড়ুন : পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ১০ রহস্য, আজও বিজ্ঞান যার ব্যাখ্যা দিতে পারেনি
এখানকার মানুষের বিশ্বাস বাঁকে বিহারী প্রতি রাতে নিধিবন রাজ মন্দিরে আসে এবং রাধা ও অন্যান্য গোপিদের সঙ্গে রাসলীলা করেন। এরপর ক্লান্ত হয়ে এই মন্দিরে বিশ্রাম নেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে শৃঙ্গার আরতি করা হয় তার। বিকেলে বিশ্রামের পর রাজভোগ আরতি এবং রাতে ঘুমানোর সময় শয়ন আরতি করা হয়।