প্রত্যেকদিন কার্যত প্রায় ২ কোটি মানুষ ট্রেন সফর করেন আমাদের এই ভারতবর্ষে। পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যাটা কয়েক হাজার। রেল যাত্রীদের জন্য একাধিক সুবিধা চালু হলেও বিশেষ করে ট্রেনের টয়লেট নিয়ে বরাবর যাত্রীদের বিস্তর অভিযোগ থাকে। ট্রেন টয়লেটের দুর্গন্ধে জেরে গোটা কামরার মানুষের দুর্ভোগ হয়। তবে যাত্রীদের সুবিধার্থে এবার ট্রেন টয়লেটে নতুন ডিভাইস বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় রেল। এর কী কী সুবিধা, জেনে নিন এই প্রতিবেদন থেকে।
‘গন্ধভেদ’ প্রকল্প কী?
সম্প্রতি পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ হাওড়া এবং শিয়ালদহ লাইনের ট্রেনগুলিতে আইওটি ভিত্তিক নতুন একটি পরিষেবা চালু করার কথা ভেবেছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘গন্ধভেদ’। মধ্য রেলওয়ে অর্থাৎ মুম্বাই জোনের বেশ কিছু স্টেশনের টয়লেটে এই সিস্টেম বসেছে। মধ্য রেলের এই সিস্টেমের সফল এক্সপেরিমেন্টের পর এবার পূর্ব রেলও ট্রেনে ট্রেনে ‘গন্ধভেদ’ ব্যবস্থা চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গন্ধভেদ প্রকল্প কীভাবে কাজ করবে?
‘গন্ধভেদ’ ব্যবস্থার আওতায় ট্রেনের শৌচাগারগুলোর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার উপর জোর দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধির উপর পর্যবেক্ষণ চালানো হবে। আপাতত হাওড়া এবং শিয়ালদহ লাইনের ১০ টি ট্রেনের উপর পরীক্ষামূলকভাবে ট্রায়াল চালানো হবে। ট্রেন টয়লেটের অবস্থার উপর সংকেত পাঠানোর কাজ করবে এই ডিভাইস।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্রের কথায়, এই সিস্টেমটি আসলে আইওটি ভিত্তিক একটি বৈদ্যুতিন ডিভাইসের মত কাজ করবে। ট্রেনের টয়লেটের দুর্গন্ধ বিচার করতে পারবে ওই স্থানে অবস্থিত উদ্বায়ী জৈব যৌগ, তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার বিচার করে। তারপর এই ডিভাইস সংকেত পাঠাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে এসএমএস এবং ওয়েবের মাধ্যমে। তারপর রেলকর্মীরা এসে ওই স্থান পরিষ্কার করবেন।
দুর্গন্ধ অনুধাবন করার জন্য এই গন্ধভেদ ডিভাইসের মধ্যে বিশেষ সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে। এই ডিভাইসটি অ্যামোনিয়া, হাইড্রোজেন সালফাইড, মিথেন, ট্রাইমিথাইল অ্যামাইন, মিথাইল মারক্যাপ্টান, ইথানল ইত্যাদি সনাক্ত করতে পারবে। এছাড়া মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি চিহ্নিত করতে পারবে।
আরও পড়ুন : এবার গভীর রাতেও মিলবে মেট্রো! বাড়লো ট্রেনের সময়সীমা, দেখুন মেট্রোর নতুন টাইম টেবিল
আরও পড়ুন : ভারতের একমাত্র ট্রেন যেটায় লাগেনা কোনও টিকিট, ৭৫ বছর ধরে বিনামূল্যে ভ্রমণ করছেন যাত্রীরা
কোন কোন ট্রেনে গন্ধভেদ ডিভাইস বসবে?
আপাতত হাওড়া ডিভিশনের ৩ টি ট্রেন, শিয়ালদা ডিভিশনের ৩ টি ট্রেন, আসানসোল ডিভিশনের ২ টি ট্রেন, মালদা ডিভিশনের ২ টি ট্রেনে পরীক্ষামূলকভাবে গন্ধভেদ ডিভাইস বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই ট্রায়াল সফল হলে স্থায়ীভাবে ট্রেনগুলোতে গন্ধভেদ ডিভাইস বসানো হবে।