ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে ডুয়ার্স খুবই পছন্দের জায়গা। বিশেষ করে বর্ষার সময় এই জায়গা পর্যটনের জন্য সেরা সময় হয়ে ওঠে। উত্তরবঙ্গে এরই মধ্যে বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে। ডুয়ার্সেও বৃষ্টি হচ্ছে। তাই পর্যটকদের মধ্যে অনেকেই সামনে ডুয়ার্স যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। কিন্তু পর্যটকদের জন্য রয়েছে একটা বিশেষ সংবাদ। খুব শীঘ্রই নাকি ডুয়ার্সের দরজা বন্ধ হতে চলেছে। কবে এবং কেন? জেনে নিন এই প্রতিবেদন থেকে।
বর্ষার সময় ডুয়ার্সের গরুমারা, চাপড়ামারি, জলদাপাড়া, গজলডোবা, ঝালংয়ের সৌন্দর্য কানায় কানায় ভরে ওঠে। এই সময় ডুয়ার্সের বন-জঙ্গল মোহময়ী হয়ে ওঠে আরও। আবার হাতি এবং বাইসনের মত বন্যপ্রাণীদেরও দেখা মিলবে। নাম না জানা অনেক পাখিও দেখা দেয় এই সময়। স্বাভাবিকভাবেই এখন পর্যটকদের ভিড় থাকবে বেশি।
তবে বর্ষার এই সময়টা আবার বন্যপ্রাণীদের প্রজননের সময়। এই সময় যদি পর্যটকদের ভিড় থাকে তাহলে তাদের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হবে। তাই পর্যটকদের চাহিদা থাকলেও আগামী তিন মাসের জন্য ডুয়ার্সের দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। ডুয়ার্সের জঙ্গলে আর প্রবেশ করার অধিকার থাকবে না কারও। প্রত্যেক বছরের মত এই বছরেও এই নিয়ম পালন হবে।
প্রত্যেক বছরের ১৫ ই জুন থেকে ১৫ ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডুয়ার্সের গভীর জঙ্গলে প্রবেশে বিধি নিষেধ চাপানো হয়। এই নিয়ম সুন্দরবনের জন্যও কার্যকর থাকে। বন্য জীবন যাতে ব্যাহত না হয় তার জন্য পর্যটকদের উপরই বনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়। বিশেষত জঙ্গল সাফারি, হাতি সাফারি এখন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে তিন মাস।
ডুয়ার্সের প্রধান জঙ্গলের রাস্তা এই সময় বন্ধ থাকলেও কিন্তু জঙ্গল লাগোয়া কিছু কিছু অংশে পর্যটকরা ঘুরতে পারবেন। কালিকাপুর জঙ্গল ক্যাম্প, ধুপঝোরা ইকো ট্যুরিজম ক্যাম্প, পানঝোরা জঙ্গল ক্যাম্প, হর্নবিল জঙ্গল ক্যাম্প, টুকটুকি ওয়াচ টাওয়ারসহ একাধিক জঙ্গল লাগোয়া ক্যাম্প সহ কিছু কিছু জায়গা খোলা থাকতে পারে। তবে কখন কোন জায়গা খোলা থাকবে বা বন্ধ হয়ে যাবে তা আগেভাগে বলা মুশকিল।
আরও পড়ুন : দার্জিলিং শব্দের মানে কী? ৯৯ শতাংশ মানুষ জানেন না
আরও পড়ুন : দার্জিলিং যাওয়া এখন আরও সহজ, চালু হল নতুন বাস পরিষেবা
বর্ষার সময় ডুয়ার্সের বিভিন্ন নদীর জল বেড়ে যায়। লিস, ঘিস, জলঢাকাসহ একাধিক নদী ফুলে ফেঁপে ওঠে। খরস্রোতা নদীগুলো এই সময় এড়িয়ে চলাই ভালো। গরুমারা জাতীয় উদ্যান, চাপড়ামারি, জলদাপাড়া, বক্সা, নেওড়া ভ্যালিসহ নানা জঙ্গল এখন বন্ধ থাকবে পর্যটকদের জন্য। এই সময় বন্যপ্রাণীদের কোনওভাবে বিরক্ত করা চলবে না। যদি কেউ করেন তাহলে বন বিভাগের তরফ থেকে শাস্তির মুখে পড়তে হবে তাকে।