পাহাড়প্রেমীদের একটা বড় অংশ বর্তমানে ট্রেকিংয়ে আসক্ত। এই অ্যাডভেঞ্চারের আস্বাদ নিতে বর্তমানে অনেকেই উঁচু উঁচু পাহাড়ে চড়ছেন। যারা দার্জিলিং ভ্রমণ করেন তাদের মধ্যে অনেকেই ট্রেকিংয়ের জন্য সান্দাকফুতে যান। কিন্তু পাহাড়ি দুর্গম এলাকার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকে। মৃত্যুও হয়েছে বেশ কিছুজনের। যে কারণে এবার ট্রেকিংয়ে ইচ্ছুক পর্যটকদের জন্য জারি হল কড়া নির্দেশিকা।
প্রায় ১১,৯৩০ ফুট অর্থাৎ ৩,৬৩৬ মিটার উঁচুতে অবস্থিত সান্দাকফু হল পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। যেখানে গরমের সময়ও প্রবল ঠান্ডা থাকে। মে-জুন মাসেও এখানে বরফ পড়ে। বহু পর্যটক এই জায়গাতে ট্রেকিং করার জন্য আসেন। তবে এই পাহাড়ি পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেন না অনেকেই। যে কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন তারা।
বিগত কিছু সময়ে পাহাড়ে এসে বহু মানুষ অসুস্থ হয়েছেন। তিনজন পর্যটকের মৃত্যুও হয়েছে ট্রেকিং করতে গিয়ে। আর এমন ঘটনার পরই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। জিটিএ কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি পর্যটকদের ভালোর জন্যই এক কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাহাড়ি দুর্গম এলাকাতে এবার থেকে যারা ট্রেকিং করতে চাইবেন তাদের আগে ফিটনেস সার্টিফিকেট দেখাতে হবে।
জিটিএ অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম বিভাগের চিফ কো-অর্ডিনেটর সোনম ভুটিয়া সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমের কাছে জানিয়েছেন তারা এবার পর্যটকদের স্বাস্থ্যের উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। এরই মধ্যে রাজ্যের পর্যটন দপ্তরের কাছে এই মর্মে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়ে গিয়েছে। যদি প্রস্তাব পাস হয় তাহলে এবার থেকে ট্রেকিংয়ে ইচ্ছুক পর্যটকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে।
তবে যতক্ষণ না পর্যন্ত প্রস্তাব পাস হচ্ছে ততক্ষণ ফিটনেস পরীক্ষা বাধ্যতামূলক থাকছে না। কিন্তু তবুও যদি পর্যটকরা নিজে থেকেই ফিটনেস সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে ট্রেকিংয়ে আসেন তাহলেই তাদের পক্ষে মঙ্গল। কারণ ৩,৫০০ মিটার উঁচুতে ওঠার মত শারীরিক সক্ষমতা সকলের থাকে না। তাই প্রশাসনের পাশাপাশি পর্যটকদেরই আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে নিজেদের শরীর নিয়ে।
আরও পড়ুন : ১৫০০ টাকায় থাকা-খাওয়া! কালিম্পংয়ের এই গ্রামে না গেলেই চরম মিস
আরও পড়ুন : দার্জিলিঙ যাওয়ার সেরা সময় কোনটা? কখন গেলে সেরা ভিউ পাবেন?
রাজ্যের পর্যটন দপ্তরের তরফ থেকে ছাড়পত্র পাওয়া গেলে সান্দাকফুতেই একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র খোলা হবে। এখানে পর্যটকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে। ইসিজি, ইকো কার্ডিওগ্রাফির মাধ্যমে তাদের হার্টের অবস্থা জানা যাবে। এক্সরে, পালমোনারি ফাংশন টেস্ট করিয়ে ফুসফুসের অবস্থা জানা হবে। সেই সঙ্গে রক্তের লোহিত রক্তকণিকা এবং শর্করার পরিমাণ জেনে নিতে হবে। কিডনির সমস্যা আছে কিনা জানা হবে। কারণ শারীরিক অবস্থা ঠিক না থাকার কারণে ট্রেকিংয়ের সময় শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বহু মানুষ।