পুরুলিয়া মানেই পর্যটকদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে অযোধ্যা পাহাড়, সবুজে ঘেরা বন জঙ্গল, জলপ্রপাত ইত্যাদি। এখন তো আবার শুধু পর্যটকরা নন, অযোধ্যা পাহাড়ের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে এখানে হবু দম্পতিরাও আসেন প্রি ওয়েডিং ফটোসেশনের জন্য। বলতে গেলে বরাবরের মত পুরুলিয়া এখনও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে অন্যতম আকর্ষণীয় জায়গা। তবে পুরুলিয়া কিন্তু ঐতিহাসিক দিক থেকেও সমৃদ্ধ জায়গা। এখানে গিয়ে কাশীপুর রাজবাড়ি না দেখলেই হবে মিস।
পুরুলিয়া জেলাতে কাশিপুর ব্লকের অন্তর্গত গ্রামে রয়েছে প্রায় ২ হাজার বছরের পুরনো পঞ্চকোট রাজবংশের রাজবাড়ি। যদিও এই রাজবাড়ির নির্মাণ হয়েছিল ১৯১৬ সালে। মহারাজ জ্যোতি প্রকাশ সিং দেও চীন থেকে রাজমিস্ত্রি এনে এই বাড়ির নির্মাণ করেছিলেন। দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর ধরে চলেছিল নির্মাণকার্য। এই বাড়ির অন্দরমহলের সাজসজ্জা ছিল একেবারে আলাদা। বেলজিয়াম থেকে বিশাল ঝাড়লন্ঠন আনা হয়েছিল।
পঞ্চকোট রাজবংশের রাজা নীলমণি সিংহ দেওর নাতি জ্যোতিপ্রসাদ সিংহের আমলে পঞ্চকোট রাজবাড়ি নতুন ভাবে সেজে উঠেছিল। রাজবংশের স্থাপন হয়েছিল ২ হাজার বছর আগে। আজ বর্তমানে এই রাজবংশের ৭২ পুরুষ রয়েছেন। এখন অবশ্য আগের মত সেই জাঁকজমক নেই। তবে রাজবাড়িতে এখন রাজকুমারী বসবাস করছেন।
কাশিপুর রাজবাড়ি বাংলার পুরনো রাজবাড়িগুলোর মধ্যে অন্যতম। যারা পুরুলিয়াতে পর্যটনের উদ্দেশ্যে যান তারা অন্তত একবার হলেও এই রাজবাড়ি দর্শন করতে চান। যদিও সারা বছর এই রাজবাড়ির দরজা পর্যটকদের জন্য খোলা থাকে না। রাজবাড়ির অন্দরমহলে ঢুকতে হলে আসতে হবে দুর্গাপুজোর সময়। দুর্গাপূজার সময় মহা ধুমধাম করে এখানে পুজো হয়।
আরও পড়ুন : অম্বুবাচীতে কেন ৩ দিন বন্ধ থাকে কামাখ্যা মন্দির? জানুন এই মন্দিরের ইতিহাস
পঞ্চকোট রাজবাড়িতে ষোড়শী রূপে দেবী পূজা পান। ১৬ দিন ধরে দেবীর ১৬ রূপের পূজা হয়। পুজোর চারটে দিন কাশীপুর রাজবাড়ির মন্দির অপূর্ব সুন্দর রূপে সেজে ওঠে। সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত রাজবাড়ির দরজা খোলা থাকে সাধারণ মানুষের জন্য। সেই সময় বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ এখানে পুজো দেখতে আসেন। দুর্গাপুজোর সময় বাদে অন্যান্য সময় রাজবাড়ির বাইরে থেকেই দেখে ফিরে যেতে হয় পর্যটকদের।