দিনের বেলা যত খুশি ঘোরাঘুরি করুন না কেন, রাত নামলেই ভৌতিক রূপ ধারণ করে ভারতের একাধিক পর্যটন স্থল। বলা হয় যতক্ষণ সূর্যালোক থাকে ততক্ষণ নাকি বিপদ নেই। তবে সূর্য একবার অস্ত গেলেই অশুভ শক্তিরা জেগে ওঠে এই জায়গাগুলোতে। কোনও কোনও জায়গাতে তো আবার নিষেধ উপেক্ষা করে রাতে অ্যাডভেঞ্চারের খোঁজে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন বহু মানুষ। এক নজরে জেনে নিন ভারতের কোন কোন জায়গা এরকম নিষিদ্ধ তালিকাতে স্থান পেয়েছে।
ভানগড় দুর্গ : রাজস্থানের ভানগড় দুর্গের কথা প্রায় সকলেই জানেন। ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগও এইখানে কিছু অস্বাভাবিক বিষয় টের পেয়ে রাতে প্রবেশের অনুমতি দেয় না। এখানে অনেকেই রাতের অন্ধকারে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন। কথিত আছে এক তান্ত্রিক নাকি এই দুর্গের রাজকন্যার প্রেমে পড়েন। তন্ত্র বলে তিনি রাজকন্যাকে হাসিল করার চেষ্টা করেন। তবে রাজকন্যা তাকে প্রাণদণ্ড দেন। তারই আত্মা নাকি আজও ঘুরে বেড়ায় এই দুর্গের আনাচে-কানাচে।
ডি-সুজা চল : মহারাষ্ট্রের মুম্বাইতে অবস্থিত এই ডি-সুজা চল। কথিত আছে এখানে নাকি একজন মহিলা পাতকুয়োতে পড়ে গিয়ে মারা গিয়েছিলেন। তারপর থেকে নাকি এই জায়গা ভৌতিক হয়ে যায়। রাতের অন্ধকারে এখানে কেউ আসেন না।
লম্বি দেহার খনি : উত্তরাখণ্ডে অবস্থিত এই খনিতে একসময় প্রচুর শ্রমিক কাজ করতেন। কিন্তু একবার এক ভয়ংকর দুর্ঘটনায় বহু শ্রমিকের মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা বলেন আজও নাকি রাতের দিকে সেই সমস্ত মৃত শ্রমিকদের কণ্ঠস্বর শোনা যায় এখানে।
অগ্রসেন কি বাওলি : দিল্লিতে অবস্থিত এই পর্যটনস্থলে অনেক পর্যটকের অস্বস্তিকর অনুভূতি হয়েছে। অনেকে বলেন এখানে নাকি কেউ তাদেরকে পিছু করছেন এমন মনে হয়েছে। পেছন থেকে যেন সবসময় কেউ নজর রাখছে, এরকম অদ্ভুত অনুভূতি হয়েছিল পর্যটকদের।
দুমা সৈকত : গুজরাটে অবস্থিত এই সমুদ্র সৈকত এক সময় শ্মশান ছিল। কিন্তু এখন সেই শ্মশান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবে মৃতদের আত্মা নাকি আজও এখানে ঘুরে বেড়ায়। রাতের অন্ধকারে কেউ সাহস করে এখানে আসতে পারেন না।
ডাউহিল : পশ্চিমবঙ্গের কার্শিয়াংয়ে অবস্থিত ডাউহিলকে নিয়ে অনেক অলৌকিক গল্পের প্রচলন রয়েছে। এখানে অবস্থিত একটি স্কুল এবং তার আশেপাশে ভৌতিক কার্যাবলী চলে। নির্জন এই স্থানে অনেকেই একটি বাচ্চার ভূত দেখতে পেয়েছেন বলেন। আবার কেউ কেউ কোনও এক মেয়ের আত্মাকেও দেখেছেন বলে দাবি করেন।
জাতিঙ্গা : অসমের এই জায়গাকে অশুভ বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এখানে কোনও এক অজ্ঞাত কারণে দলে দলে পাখি আকাশ থেকে মৃত অবস্থায় ঝরে পড়ে। কেন এখানে এত পাখির মৃত্যু হয় তা কেউ জানে না।
বম্বে হাইকোর্ট : মহারাষ্ট্রের মুম্বাইতে অবস্থিত বম্বে হাইকোর্টকে নিয়েও এরকম অদ্ভুত গল্পের প্রচলন আছে। এখানে বহু মানুষকে মৃত্যুদন্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। তাদের আত্মা নাকি আজও এখানে ঘুরে বেড়ায়।
আরও পড়ুন : ভারতের সবথেকে বিলাসবহুল ট্রেন, যার এক রাতের ভাড়া দিয়ে সাত জন্মের ট্রেনের টিকিট কাটা যাবে
কুলধারা গ্রাম : রাজস্থানে অবস্থিত কুলধারা গ্রাম আজও রহস্যময়। ১৮২৫ সালে একদিন রাতারাতি এই গ্রামের প্রতিটা মানুষ উধাও হয়ে যায়। তাদের খোঁজ পাওয়া যায়নি আর কখনও। তবে তারা নাকি অভিশাপ দিয়ে গিয়েছিলেন এই জায়গাটাকে। পরবর্তী দিনে এখানে কেউ বসতি গড়তে পারেনি। যে কারণে আজও এই গ্রামকে অভিশপ্ত বলে ধরা হয়।
কিরাডু মন্দির : রাজস্থানের কিরাডু মন্দিরকে আজও ভীষণ ভয় পান সাধারণ মানুষ। কথিত আছে এই মন্দিরের উপর নাকি এক সাধুর অভিশাপ রয়েছে। রাতের অন্ধকারে তো দূরের কথা, দিনের বেলাতেও এখানে কেউ যেতে পারেন না। মানুষ যদি এখানে গিয়ে ফেরার পথে পেছনে ফিরে মন্দিরের দিকে তাকায় তাহলে নাকি সঙ্গে সঙ্গে পাথর হয়ে যায়। এরকম এক মহিলার প্রস্তর মূর্তিও আছে এই এলাকাতে।