ভ্রমণপ্রেমীদের মধ্যে বেশিরভাগেরই জীবনে অন্তত একবার সুইজারল্যান্ড যাওয়ার ইচ্ছে থাকে। তবে বাজেটে না কুলোলে কী আর করা যায়। কিন্তু জানেন কি ভারতীয় এমন একাধিক জায়গায় রয়েছে যেখানকার সৌন্দর্য কার্যত সুইজারল্যান্ডকেও হার মানাবে। হিমাচল প্রদেশের চাম্বা জেলাতে এমন একটি ছোট্ট গ্রাম রয়েছে সৌন্দর্যের নিরিখে যাকে মিনি সুইজারল্যান্ড হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
হিমাচল প্রদেশের চাম্বা জেলায় অবস্থিত ছোট্ট একটি গ্রাম খাজিয়ার। সবুজে ঘেরা বনভূমি এবং মাথার উপর নীল আকাশ দেখলে যেন মনে হয় স্বর্গরাজ্য। এখানে রয়েছে ঘন পাইনের বন, ছোট ছোট লেক, পাহাড়ি উপত্যকার ঢাল বরাবর রংবেরঙের বাড়ি রয়েছে। দেখলে যেন মনে হয় হাতে আঁকা ছবি। ছবির মত এই গ্রামের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে খোদ সুইস সরকার গ্রামটিকে সুইজারল্যান্ড অফ ইন্ডিয়া আখ্যা দিয়েছে। শীতকালে এই গ্রামের আলাদাই এক সৌন্দর্য আছে। শীতকাল এলেই বরফের চাদরে ঢেকে যায় এই গ্রাম। কী কী দেখবেন এখানে জেনে নিন।
কী কী দেখবেন?
খাজিয়ার লেক : ডালহৌসি এবং চাম্বা শহরের মাঝে অবস্থিত ছোট্ট এই হ্রদ না দেখলেই নয়। চারিদিকে ঘন সবুজ উপত্যকা, আর তার মাঝে অবস্থিত এই ছোট্ট লেক আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
ট্রেকিং সাইট : যারা ট্রেকিং করতে ভালোবাসেন তাদের জন্য ছোট ছোট ট্রেকিংয়ের রাস্তা আছে। খাজিয়ার থেকে দইকুন্ড সাড়ে তিন কিলোমিটারের ট্রেকিং পথ। এই পাহাড়ি পথে পিরপাঞ্জাল এবং ধৌলাধর শিখরের দেখা মিলবে। যারা প্যারাগ্লাইডিং, জোর্বিং করতে চান তাদের জন্য এখানে সেই ব্যবস্থা রয়েছে।
নাগমন্দির : এখানে খাজি নাগের মন্দির রয়েছে। দ্বাদশ শতাব্দীর এই মন্দিরের আলাদাই ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। হিন্দু এবং মোগল শিল্পকলার অপূর্ব নিদর্শন মিলবে এই মন্দিরের গায়ে।
কালাটপ অভয়ারণ্য : খাজিয়ার থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যেই রয়েছে কালাটপ অভয়ারণ্য। এখানে দেবদারু গাছের ঘন জঙ্গল রয়েছে। চাম্বা রাজারা আগে এখানে শিকার করতেন। রবি নদীর ধারে অবস্থিত এই অভয়ারণ্যে ভাল্লুক, চিতাবাঘ, শেয়াল, লেঙ্গুরসহ হরেক রকমের পাখি দেখতে পাওয়া যাবে।
সোনার দেবী মন্দির : এটা আসলে একটি কালী মন্দির। এই কালীমন্দির খাজিয়ার লেকের ঠিক ধারে অবস্থিত। এই মন্দিরের সোনালী গম্বুজের কারণে এর এমন নাম হয়েছে। পর্যটকদের জন্য এটাও এক অপূর্ব ভ্রমণ সাইট।
কৈলাস পর্বত : খাজিয়ার লেক থেকে কৈলাস পর্বত দেখতে পাওয়া যায়। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস এখানে মহাদেবের বাস। এখানে ৮৫ ফুট উঁচু শিবের মূর্তি রয়েছে।
আরও পড়ুন : ১৬ ঘন্টা নয়, এবার মাত্র ২ ঘন্টায় পৌঁছে যাবেন সিকিম, খুলে গেল নতুন রাস্তা
কোথায় থাকবেন, কী খাবেন?
এখানে থাকার জন্য অনেক বিলাসবহুল হোটেল, রিসোর্ট এবং হোম স্টে পেয়ে যাবেন। আঞ্চলিক খাওয়া-দাওয়ার খুব ভালো ব্যবস্থা রয়েছে হোম স্টেগুলোতে।
আরও পড়ুন : অনেক হল দার্জিলিং-গ্যাংটক! গরমের ছুটিতে ঘুরে আসুন এই ৩ শৈল শহর থেকে
আর কোথায় কোথায় যেতে পারেন?
এখান থেকে কাছেপিঠের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে ডালহৌসি। ব্রিটিশরা এই শহরকে স্কটল্যান্ডের সঙ্গে তুলনা করেন। এছাড়া হিমাচলের আরেকটি ছোট্ট পাহাড়ি শহর ধরনশালাতেও যাওয়া যাবে। দলাই লামার উদ্যোগে এখানে তিব্বতি শরণার্থীদের উপনিবেশ গড়ে উঠেছে।