ট্রেন দাঁড়ালেও নেই কোনও টিকিট কাউন্টার। কোনও স্টেশন মাস্টারও নেই। অথচ বাংলার এই রেলস্টেশন এভাবেই টিকিট কাউন্টার বিহীন, স্টেশন মাস্টারবিহীন অবস্থায় দিনের পর দিন বছরের পর বছর পরিষেবা দিয়ে চলেছে। জানেন কি কোথায় রয়েছেন এমন অদ্ভুত রেলস্টেশন? কীভাবেই বা সেখানে সব কাজ হয়? জানলে অবাক হবেন।
একসময় গোটা ভারতের কাছে বেশ পরিচিত ছিল বাংলার এই রেল স্টেশন। ব্রিটিশ আমলে গম গম করত এই জায়গা। আজও যখন এই স্টেশনের পাশ দিয়ে ট্রেন যায় তখন ট্রেন যাত্রীরা ব্রিটিশ আমলের বিভিন্ন স্থাপত্য দেখতে পান। এক ফালি ইতিহাসের মাঝেই দ্রুত গতিতে ছুটে চলে ট্রেন। কলকাতা থেকে এর দূরত্ব মাত্র কয়েক ঘন্টা। স্টেশনের নাম কাঁচরাপাড়া কারখানা গেট।
নৈহাটি থেকে রানাঘাটের রুটে কাঁচরাপাড়া কারখানা গেট রেল স্টেশনটি পড়ে। ১৮৬৩ সালে এখানে ব্রিটিশরা রেলের ওয়ার্কশপ গড়ে তুলেছিল। সেই সময় এই জায়গার নাম ছিল বিজপুর। ট্রেনে করে হালিশহর স্টেশন পার করার পর থেকেই ব্রিটিশ আমলে সাহেবদের তৈরি নানা বিল্ডিং চোখে পড়বে। সেসব পেরিয়ে পৌঁছতে হয় কাঁচরাপাড়ার কারখানা গেট রেলস্টেশনে।
আরও পড়ুন : বেড়ে গেল একাধিক ট্রেনের স্পিড! কোনটার গতিবেগ কত হল? দেখে নিন তালিকা
ব্রিটিশ আমলে প্রায় ১ লক্ষ ৩২ হাজার বর্গমিটার জায়গার উপর তৈরি হয়েছিল এই ওয়ার্কশপ। যেখানে প্রচুর কর্মী কাজ করতেন। ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে টেকনিক্যাল পড়ুয়ারা এখানে ট্রেনিং নিতে আসতেন। এখানে লোকোশপ, ক্যারেজ, ওয়াগন শপ, বাষ্প চালিত ইঞ্জিনের কাজ হত। ধীরে ধীরে এই ওয়ার্কশপের কাজে ভাটা পড়ে। কর্মী সংখ্যাও কমে যায়। এখন এখানে শুধু ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনের কাজ হয়।
আরও পড়ুন : এই কামরার এই সিটে বসুন সবসময়, ট্রেন দুর্ঘটনা হলেও আপনার কিছু হবে না
আরও পড়ুন : ট্রেনে এই ৫ সংখ্যার কোড লেখা থাকে কেন? ৯৯% মানুষ জানেন না
কাঁচড়াপাড়া ওয়ার্কশপ গেট রেল স্টেশনে দুটি লোকাল ট্রেন আজও স্টপেজ দেয়। শিয়ালদা থেকে কল্যাণী সীমান্ত যাওয়ার পথে এবং কল্যানী সীমান্ত থেকে শিয়ালদা যাওয়ার পথে দুটি লোকাল ট্রেন এখানে দাঁড়ায়। কিন্তু এই স্টেশনের কাছে কোন টিকিট কাউন্টার নেই। স্টেশন মাস্টার নেই। কোনও টাইমটেবিল নেই। বিগত দেড়শ বছরের ইতিহাস বহন করে আজও দাঁড়িয়ে আছে কাঁচরাপাড়া ওয়ার্কশপ গেট রেল স্টেশন।