আমাদের দেশে দিনে দিনে বাড়ছে ইন্টারনেটের খরচ। সদ্য যে হারে মোবাইল এবং ইন্টারনেটের রিচার্জের দাম বাড়ানো হয়েছে তাতে কপালের ঘাম মুছছেন আমজনতা। তবে জানেন কি এই পৃথিবীতে এমন একটি দেশ রয়েছে যেখানে ইন্টারনেট বিনামূল্যে পাওয়া যায়? সেই দেশের সরকার বিনামূল্যে ইন্টারনেট সরবরাহ করে। আবার বাস ভাড়াও লাগে না যাতায়াতের জন্য। জানেন সেই দেশের নাম?
পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে ফ্রি ইন্টারনেট এবং ফ্রি পাবলিক ট্রান্সপোর্টের সুবিধা পান নাগরিকেরা সেই দেশটির নাম এস্তোনিয়া। এটি ইউরোপের একটি ছোট্ট দেশ। এখানকার মানুষেরা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন একটাও টাকা না খরচ করে। আজ থেকে নয়, সেই ২০০০ সাল থেকে এখানকার মানুষেরা ফ্রি ইন্টারনেট এবং ফ্রি পাবলিক ট্রান্সপোর্ট পাচ্ছেন।
এস্তোনিয়া দেশের সমস্ত স্কুল এবং কলেজে বিগত ২৪ বছর ধরে বিনামূল্যে ইন্টারনেট সরবরাহ করা হয়। এখানকার ৯০ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া থেকে শুরু করে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য টাকা দেওয়া সবই এখানকার মানুষ ইন্টারনেট মারফত করেন। অনলাইনে টাকার লেনদেন করতে অভ্যস্ত এদেশের মানুষেরা।
এস্তানিয়া হল সারা বিশ্বের বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি মডেল দেশ। আমেরিকার বেসরকারি সংস্থা ফ্রিডম হাউসের তরফ থেকে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ইউরোপের উত্তর-পূর্বে বাল্টিক সাগরের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত এস্তোনিয়া একসময় সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্গত ছিল। ১৯৯১ সালে রাশিয়া থেকে স্বাধীনতা পায় এই দেশ।
তবে স্বাধীনতার পর দ্রুত অর্থনৈতিক দিক থেকে উন্নতি সাধন করেছে এস্তোনিয়া। স্বাধীনতা পাওয়ার মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই অনেকখানি উন্নতি করে ফেলেছে এই দেশ। ২০১৩ সাল থেকে এখানকার সরকার বিনামূল্যে পাবলিক ট্রান্সপোর্টের পরিষেবা চালু করে নাগরিকদের জন্য। দেশের তৎকালীন মেয়র এডগার সাভিসার বলেন যে এখানকার মানুষদের মধ্যে বিভেদ মেটাতে হলে মেলামেশার সুযোগ দিতে হবে।
আরও পড়ুন : বিশ্বের ১০টি নতুন দেশ, যেগুলোর নাম ৯৯% মানুষ জানেন না
আরও পড়ুন : ভারতের সবথেকে ব্যয়বহুল ৫ হানিমুন ডেস্টিনেশন, যার বাজেট বিদেশকেও হার মানায়
এস্তোনিয়াতে যখন প্রথমবার গণভোটের আয়োজন হয় তখন বাস এবং ট্রামের ভাড়া তুলে নেওয়া হয়। গণপরিবহন ব্যবহার করার ফলে এখানকার বাতাসে বায়ু দূষণের মাত্রাও বেশ কম। এই দেশটিতে তিন হাজারের বেশি ফ্রি ওয়াইফাই স্পট রয়েছে। এখানকার কফি শপ, পেট্রোল পাম্প, রেস্তোরাঁ, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, হোটেল এবং সমস্ত সরকারি অফিসে বিনামূল্যে ওয়াইফাই ব্যবস্থা রয়েছে। এখানকার মানুষ ভোট দেন অনলাইনে। শুধু ইউরোপ নয়, গোটা পৃথিবীর নিরিখে মডেল দেশ হল এই এস্তোনিয়া।