বর্ষায় যদি প্রকৃতির রূপ পর্যবেক্ষণ করতে চান তাহলে এই বাংলাতেই এরকম একাধিক পর্যটন স্থান পাবেন। তার মধ্যে অন্যতম হল ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা প্রায় প্রত্যেকটা মরসুমেই আলাদা আলাদাভাবে সেজে ওঠে এই জায়গা। বর্ষার সময় বেলপাহাড়ির পাহাড়, জঙ্গল দেখলে প্রকৃতির মধ্যে হারিয়ে যাবে মন। যাবেন নাকি একবার সেখানে?
বেলপাহাড়ির জায়গায় জায়গায় শাল গাছের জঙ্গল রয়েছে। বর্ষার সময় যখন মেঘ ঘনিয়ে আসে তখন জঙ্গল আর মেঘ মিলেমিশে গিয়ে অপরূপ এক সৌন্দর্য সৃষ্টি করে। বর্ষায় গাছপালা আরও ঘন সবুজে ভরে ওঠে। এখানে ঝর্ণাও রয়েছে। বর্ষার জল পেয়ে ফুলেফেঁপে ওঠে সেই ঝর্ণা।
কী কী দেখবেন?
এখানে রয়েছে গাড়রাসিনী পাহাড়। জঙ্গলের মধ্যে এই পাহাড়ের অবস্থান। পাহাড়ের রাস্তা বেয়ে কিছুদূর ওপরে উঠলে বাসুদেবের মন্দির দেখতে পাবেন। সেখানে খানিকক্ষণ বসে বিশ্রাম নিতে পারবেন। তারপর মন্দিরের পাশ দিয়ে পাহাড় বেয়ে উপরে উঠলে আরও একটি মন্দির পাবেন। পাহাড়ের একদম উপর থেকে চার-পাশটা দেখলে মনের সব ক্লান্তি মুছে যাবে।
এখানে পাথরের উপর দিয়ে ঢাঙ্গিকুসুম নদী বয়ে যাচ্ছে। বর্ষার সময় নদীর জল সশব্দে প্রবাহিত হয়। তবে বর্ষার সময় ছাড়া অন্য সময় এলে এই নদীকে তেমন প্রাণবন্ত দেখাবে না। বেলপাহাড়িতে পাহাড়, নদী, ঝর্ণা, জঙ্গল তো রয়েইছে, সেই সঙ্গে এখানে আছে ঘাগরা জলপ্রপাত। বেলপাহাড়ি থেকে তার দূরত্ব মাত্র ৭ কিলোমিটার।
বর্ষার সময় ঘাগরা জলপ্রপাত আরও বেশি সুন্দর হয়ে ওঠে। এখানে একটি গিরিখাতের সৃষ্টি হয়েছে জলপ্রপাতের জল পড়ে। বর্ষার সময় সেসব গর্ত জলে ভরে থাকে। এর খুব কাছেই রয়েছে তারাফেনী জলাধার। সবুজ গাছপালার মাঝে এই জলাধার দেখলে মন জুড়িয়ে যাবে।
শাল গাছের জঙ্গলের মধ্যে খ্যাঁদারানী হ্রদের দেখা পাবেন। বিকেলের সময় এই জায়গা অপরূপ সৌন্দর্যে ভরে ওঠে। হ্রদের পাশে একটি কংক্রিটের সেতু আছে। সেখান থেকে সূর্যাস্ত দেখতে বেশ লাগবে। আর এখানে রয়েছে চাতন পাহাড়। বেলপাহাড়ি থেকে কাঁকড়াঝোড়ের দিকে যাওয়ার পথে পড়বে এই পাহাড়। পাহাড়ের উপর ২০০ মিটার উঠলে প্রাগৈতিহাসিক আমলের তিনটে আদিম গুহা দেখতে পাবেন।
আরও পড়ুন : ভারতের এক রহস্যময় উপত্যকা! যেখানে গেলেই নিখোঁজ হয়ে যায় মানুষ
আরও পড়ুন : মেঘের আড়ালে লুকিয়ে ছোট্ট গ্রাম! ভরা বর্ষায় ঘুরে আসুন সিকিমের এই অফবিট লোকেশন থেকে
কীভাবে যাবেন?
সড়কপথে গেলে কলকাতা থেকে বেলপাহাড়ির দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার। ঝাড়গ্রাম হয়ে বেলপাহাড়ি যেতে হবে ঘুরতে ঘুরতে। ঝাড়গ্রাম স্টেশনে পৌঁছে গাড়ি ভাড়া করে বেলপাহাড়ি যাওয়া যায়। আবার কলকাতা থেকে বেলপাহাড়ি যাওয়ার বাস পেয়ে যাবেন। এখানে থাকার এবং খাওয়ার সুব্যবস্থা রয়েছে।