কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর একের পর এক প্রশ্ন উঠছে রেলের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়ে। একের পর এক ভয়ংকর দুর্ঘটনার পরেও প্রশাসনের নজর নেই। অথচ রেল নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার একাধিক ব্যবস্থা কিন্তু রয়েছে। প্রথমত কবচ সিস্টেম, যা দুর্ঘটনা ঘটার আগের মুহূর্তে নিজে থেকেই ব্যবস্থা নিতে পারে। দ্বিতীয়ত, LHB কোচের ব্যবস্থা। কবচ নিয়ে আগেই জানিয়েছি আপনাদের। আজকের এই প্রতিবেদনে রইল LHB কোচ সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য।
LHB কোচ কী?
LHB কোচ হল লিংক হফম্যান বুশ কোচ। ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়লে LHB কোচ কখনোই উল্টে যায় না। যার ফলে ট্রেনের কামরা উল্টে যাওয়ায় যাত্রীরা যে ধরনের আঘাতের সম্মুখীন হন তার থেকে অনেকটাই নিরাপত্তা মেলে। যখন দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় তখন সাধারণ কামরা দূরে ছিটকে যায় এবং উল্টে পড়ে। কিন্তু জার্মান প্রযুক্তিতে তৈরি LHB কোচ নিজের জায়গাতেই থাকে।
LHB কোচে রয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। এর মধ্যে নিউমেটিক ব্রেক সিস্টেম রয়েছে। এমন কামরায় থাকলে যাত্রী এবং তাদের সঙ্গে থাকা জিনিসপত্রের ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই সামাল দেওয়া যায়। এরকম কামরার মধ্যে অ্যান্টি রোল, অ্যান্টি-কোলাপ্স এবং অ্যান্টি টেলিস্কোপিক ব্যবস্থা থাকে। ট্রেনের কামরা মাইল্ড স্টিল দিয়ে তৈরি হয়। যার ফলে এটি সাধারণ কামরার থেকে ওজনে অনেক হালকা হয়।
বর্তমানে ভারতের বেশিরভাগ ট্রেনের কামরা ICF। LHB কোচ এগুলোর চেয়ে অনেক বেশি উন্নত। ডিস্ক ব্রেক থাকার কারণে যাত্রাও অনেক বেশি আরামদায়ক হয়। সাধারণ ট্রেনের তুলনায় অনেক দ্রুত গতিতে ছুটতে পারে LHB কোচের ট্রেন। এরকম ট্রেনে দুলুনি এবং আওয়াজ দুটোই কম থাকে।
আরও পড়ুন : রেলের কবচ আসলে কী? দুর্ঘটনা থেকে এটা কীভাবে যাত্রীদের প্রাণ বাঁচায়?
আরও পড়ুন : কীভাবে ঘটল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা? অবশেষে ফাঁস হল আসল কারণ
দুর্ঘটনা ঘটলে সব থেকে কম ক্ষতিগ্রস্ত হয় LHB কোচ। দুর্ঘটনার পর উদ্ধার কাজ অনেক সহজ হয়। তাই ভারতীয় রেল মন্ত্রক ২০১৭ সালে LHB কোচ চালু করার কথা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু দীর্ঘ ৭ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনা ফের একবার LHB কোচের প্রয়োজনীয়তার কথা মনে করিয়ে দিল। আর কতদিন পর ভারতে ট্রেনযাত্রায় যাত্রী নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হবে? প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ।