Metro Evacuation Shaft : দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে গত মাসে চালু হয়েছে গঙ্গার নিচে আন্ডার ওয়াটার মেট্রোর চলাচল। হাওড়া থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত যাতায়াত এখন খুবই কম সময়ে এবং কম খরচে হবে। তবে গঙ্গার তলায় মেট্রোর চলাচল নিয়ে অনেক ভয়ও কাজ করছে সাধারণের মনে। উপর দিয়েই বয়ে চলেছে সুগভীর গঙ্গা। কোনওভাবে দুর্ঘটনা ঘটলে কীভাবে বেরোনো যাবে মেট্রো থেকে? তবে চিন্তার কারণ নেই। কারণ সেই ব্যবস্থাও করা রয়েছে যাত্রীদের জন্য।
জরুরী পরিস্থিতিতে কীভাবে আন্ডারওয়াটার মেট্রো থেকে বেরোবেন যাত্রীরা?
ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোতে যাত্রী সুরক্ষার জন্য সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জরুরী পরিস্থিতিতে যাত্রীরা যাতে তড়িঘড়ি বেরিয়ে আসতে পারেন তার জন্য সুড়ঙ্গের মধ্যেই আরেকটি সুড়ঙ্গে লিফটের ব্যবস্থা রয়েছে। জরুরী পরিস্থিতিতে স্ট্র্যান্ড রোডের একটি ইভাকুয়েশন বা ভেন্টিলেশান শাফ্ট দিয়ে ১২ তলা পর্যন্ত উঠতে হবে।
এই ভেন্টিলেশন শাফ্টটি ৪৩.৫ মিটার গভীর। আন্ডারক্রাফ্টসহ এই শাফ্ট একটি ১৫ তলা বিল্ডিং এর সমান উঁচু। কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন এবং পূর্ব পশ্চিম করিডোরের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন এই ভেন্টিলেশন শাফ্ট ভারতের সব ভূগর্ভস্থ রেল প্রকল্পের মধ্যে সবথেকে গভীর। সুড়ঙ্গ বরাবর ওয়াকওয়ে থেকে স্ট্রান্ড রোডের লেভেল পর্যন্ত উঠতে হবে যাত্রীদের। অর্থাৎ ৩৬ মিটার বা ১২ তলা উপরে উঠতে হবে তাদের।
শাফ্টের ভেতরে যাত্রীরা যাতে নিঃশ্বাস নিতে পারেন তার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফায়ারপ্রুফ দরজা দিয়ে দুটি ক্রস প্যাসেজের মাধ্যমে দুটো টানেলের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে এই শাফ্ট। হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেডের মধ্যে একটিমাত্র বায়ু চলাচলকারী ইভাকুয়েশন শাফ্ট রাখা হয়েছে।
ন্যাশনাল ফায়ার প্রটেকশন অ্যাসোসিয়েশনের নির্দেশিকা অনুসারে স্টেশনের মাধ্যমে, বা শাফ্টের মাধ্যমে বা ক্রস প্যাসেজের মাধ্যমে প্রত্যেক ৭৬২ মিটারে একজন যাত্রী সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা থাকা উচিত। হাওড়া থেকে মহাকরণ স্টেশনের দূরত্ব যেহেতু ২ কিলোমিটার তাই স্ট্যান্ড রোডে শাফ্ট তৈরি করা হয়েছে। এই শাফ্ট এবং হাওড়া স্টেশনের মধ্যে দূরত্ব ৭৬০ কিলোমিটার।
হাওড়া ময়দান থেকে এক্সপ্ল্যানেডের মধ্যে দুটো সমান্তরাল টানেলে সংযোগকারী আটটি ক্রস প্যাসেজ রাখা হয়েছে। হাওড়া ময়দান এবং হাওড়া স্টেশনের মধ্যে তিনটে ক্রস প্যাসেজ আছে। স্ট্যান্ড রোড শাফ্ট এবং মহাকরণের মধ্যে পাঁচটি ক্রস প্যাসেজ রয়েছে। প্রত্যেকটি ক্রস প্যাসেজ চওড়াতে ৩ মিটার।
গঙ্গার তলে মেট্রোতে হঠাৎ আগুন লেগে গেলে কীভাবে রক্ষা পাবেন যাত্রীরা?
এর জন্য প্রত্যেকটা ক্রস প্যাসেজকেই ফায়ার প্রুফ করা হয়েছে। টানেলে হঠাৎ আগুন লেগে গেলে যাত্রীদের ট্রেন থেকে নামিয়ে এই ক্রস প্যাসেজের মাধ্যমে অন্য টানেলে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান থেকে নিরাপদে বেরিয়ে আসতে পারবেন যাত্রীরা।
টানেল ফুটো হয়ে গঙ্গার জল ঢুকে পড়লে কীভাবে রক্ষা পাবেন যাত্রীরা?
টানেল ফুটো হয়ে যাতে গঙ্গার জল মেট্রোর মধ্যে ঢুকে না পড়তে পারে তার জন্য হুগলির নিচে একটি ক্রস প্যাসেজ তৈরি করা হয়নি। উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর বিপরীতে যাত্রীদের জন্যে ওয়াক ওয়ে রয়েছে। মাঝপথে যদি ট্রেন থেকে নামতে হয় তাহলে তাদের ট্র্যাকের উপর দিয়ে হাঁটতে হবে না। প্রত্যেকটি ওয়াকওয়ে ২ ফুট চওড়া এবং হ্যান্ডেল আছে। আবার আলোর ব্যবস্থাও আছে।