বর্তমানে প্রত্যেকদিন কয়েক হাজার মানুষকে গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছে কলকাতা মেট্রো। ভিড় বহুল এলাকাতে সস্তায় এবং কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য কলকাতা মেট্রোর জবাব নেই। এবার এই মেট্রো পরিসেবাকে আরও উন্নত মানের করে তোলার চেষ্টা করছে পূর্ব রেল। তার জন্য এবার এক অত্যাধুনিক সিস্টেম চালু হবে মেট্রোতে। কী সেই ব্যবস্থা? কীভাবে উপকৃত হবেন যাত্রীরা? জেনে নিন।
বর্তমানে বেশিরভাগ ট্রেন চলে ইলেকট্রিসিটি মারফত। মেট্রোর বৈদ্যুতিন ট্রেনগুলো হঠাৎ হঠাৎ করেই মাঝপথে থমকে যায় বৈদ্যুতিক বিপর্যয়ের কারণে। জায়গায় জায়গায় বিদ্যুৎ ট্রিপ করে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। যার ফলে মেট্রোর গতি থমকে যায়। এছাড়া গ্রিড বিপর্যয়ের সমস্যা তো রয়েইছে। এবার এই সমস্যার মোকাবিলা করার জন্য অত্যাধুনিক পরিষেবা গ্রহণ করা হচ্ছে।
দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষ, জোকা থেকে মাঝেরহাট, ওদিকে সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদা, এসপ্ল্যানেড থেকে হাওড়া ময়দান, কবি সুভাষ থেকে রুবি পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে বর্তমানে। এত সুবিস্তৃত রুট জুড়ে যাতে নির্বিঘ্নে পরিষেবা দেওয়া যায় তার জন্য মেট্রো নেটওয়ার্ক পরিষেবা যথাযথ রাখতে হবে। আর সেই কারণেই কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ বিপর্যয় রুখতে তৎপর হয়েছে।
এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য তাইওয়ানের একটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে কলকাতা মেট্রো। চুক্তি অনুসারে ওই চিনা সংস্থা ভারতেই লিথিয়াম আয়রন ব্যাটারি উৎপাদন করবে। তারপর ধাপে ধাপে সেই সিস্টেম ব্যবহার করা হবে। প্রথমে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রো সেন্ট্রাল স্টেশনে ব্যাটারি এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম তৈরি হবে। এইভাবে মোট ৪ টি এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম তৈরি হবে কলকাতার বুকে।
এই লিথিয়াম আয়রন ফসফেট ব্যাটারি এবং উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ইনভার্টার মেট্রোর বিকল্প বিদ্যুৎ সরবরাহের উৎস হয়ে উঠবে। লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির তুলনায় লিথিয়াম আয়রন ফসফেট ব্যাটারিতে ক্ষতিকারক রাসায়নিকের পরিমাণ কম। কাজেই তা তুলনামূলকভাবে পরিবেশবান্ধব। নতুন এই ব্যবস্থায় সেন্ট্রাল স্টেশনে ৬.৪ মেগাওয়াটের শক্তি সঞ্চয় এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলা যাবে।
আরও পড়ুন : সিট ছাড়াও ট্রেন টিকিটে কী কী ফ্রী পাওয়া যায়? ৯৯% মানুষ জানেন না
আরও পড়ুন : এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কেটে লোকাল ট্রেনে চাপা যায়? ৯৯% মানুষ জানেন না
মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, এই ব্যবস্থা চালু হয়ে গেলে বড়সড়ো বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে বিদ্যুতের যোগান দেওয়া সম্ভব হবে। ব্যাটারি থেকে বিদ্যুৎ ব্যবহারের ফলে খরচ কিছুটা কমানো সম্ভব হবে। সুড়ঙ্গের মধ্যে কোনও ট্রেন বিদ্যুতের অভাবে দাঁড়িয়ে পড়লে সর্বোচ্চ ৩০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালিয়ে পরের স্টেশন পর্যন্ত যাত্রীদের পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।