বর্ষা শুরু হতে আর খুব বেশি দেরি নেই। এরই মধ্যে দেশে বর্ষা প্রবেশ করে গিয়েছে। বাংলার উত্তরবঙ্গেও চলছে বৃষ্টিপাত। যদি প্রকৃতির আসল রূপ পর্যবেক্ষণ করতে হয় তাহলে এই সময় ঘরে না থেকে বেরিয়ে পড়ুন। কোথায় যাবেন? হাতের কাছেই তো রয়েছে উত্তরাখণ্ডের ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স। পৃথিবীর বুকে এমন স্বর্গরাজ্য আর দুটি নেই।
কী কী দেখবেন?
উত্তরাখণ্ডের চামোলিতে অবস্থিত এই ন্যাশনাল পার্ককে স্থানীয়রা ভালবেসে নাম দিয়েছেন ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স। স্থানীয়রা বলেন ‘ফুলো কি ঘাঁটি’। অর্থাৎ বাংলায় বললে কথাটা দাঁড়ায় পুষ্প উপত্যকা বা ফুলের বাগান। ১৯৮২ সালে এই ন্যাশনাল পার্কটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। স্থানীয় আলপাইন ফুলের তৃণভূমি রয়েছে এখানে। হরেক রকম লতা, গুল্ম এবং বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ রয়েছে এই জায়গায়।
ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্সে অন্ততপক্ষে ৫২১ রকমের উদ্ভিদ রয়েছে বলে জানা যায়। এখানে এখানে ৩০০ প্রজাতির ফুল পাওয়া যায়। বেশিরভাগ গাছ এবং ফুল এখানে বিরল প্রজাতির। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩,৩৫২ থেকে ৩,৬৯৮ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই জায়গায় এলে যেন মনে হয় স্বর্গ। জুন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত এই জাতীয় পার্ক খোলা থাকে।
জুন থেকে অক্টোবর মাস ছাড়া অন্যান্য সময় তুষারপাতের কারণে এখানে সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকে। এখানে বার্চ, রডোডেনড্রন, ব্রহ্ম কমলের গাছ রয়েছে। রামায়ণের বর্ণনা অনুসারে হনুমান লক্ষণকে বাঁচানোর জন্য সঞ্জীবনীর খোঁজে এসেছিলেন এখানে। এখানে জঙ্গলের মধ্য দিয়ে বয়ে গিয়েছে পুষ্পবতী নদী। প্রায় ৮৭ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত এই উপত্যকার পূর্ব দিকে রয়েছে নন্দা দেবী ন্যাশনাল পার্ক।
এখানে পাহাড়ের বুকে ট্রেকিং করার সুবিধাও পাওয়া যায়। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত হল এখানে ট্রেকিংয়ের সেরা সময়। প্রায় ১৪০০০ ফুট উচ্চতায় ৭ কিলোমিটারের পথ যেতে এবং আসতে সময় লাগবে দুদিন। আসা-যাওয়ার পথে নানা রঙের ফুল চোখে পড়বে।
এই ন্যাশনাল পার্কে কালো ভাল্লুক, স্নো লেপার্ড, কস্তুরী হরিণ, বাদামী ভাল্লুক, লাল শিয়াল, নীলগাইসহ বিপন্ন প্রাণীদের দেখা মিলবে। এছাড়া হিমালয়ান মোনাল ফিজ্যান্ট প্রজাতির বহু পাখির দেখা মিলবে। অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে হেমকুন্ড সাহিব, ভূষণ্ডি তাল, চন্দ্রভাগা নদী, যোশীমঠ ইত্যাদি।
কীভাবে যাবেন?
হরিদ্দার থেকে গোবিন্দঘাটের পথে যেতে পারেন। ঋষিকেশ থেকে ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স যাওয়ার সুবিধা বেশি। প্রথমে ঋষিকেশ থেকে শেয়ার ক্যাব কিংবা বাসে যোশীমঠ পৌঁছাতে হবে। তারপর সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স ন্যাশনাল পার্ক পৌঁছাতে হবে।
আরও পড়ুন : পাহাড়ের কোলে অফবিট গ্রাম! বর্ষায় উত্তরবঙ্গে বেড়ানোর জন্য সেরা এই জায়গা
আরও পড়ুন : খোদ কলকাতার বুকে স্নো ফল! দার্জিলিং-গ্যাংটক ভুলে সবাই ছুটছেন কলকাতার এই জায়গায়
কোথায় থাকবেন?
এখানে বেশ কিছু টুরিস্ট এবং হোটেল পাওয়া যায়। যোশীমঠ, গোবিন্দঘাট, ঘাংরিয়ায় গাড়োয়াল মণ্ডল বিকাশ নিগমের টুরিস্ট লজ পাবেন। এছাড়া কম থেকে বেশি বাজেটের হোটেল পাওয়া যাবে। ধর্মশালাতেও থাকতে পারেন।