যারা ট্রেকিংপ্রেমী তারা সান্দাকফুতে নিশ্চয়ই গিয়েছেন? তবে ট্রেকিং ছাড়াও অনেকে শুধু পাহাড়ের দেশে ছুটি কাটানোর জন্য সান্দাকফু গিয়ে থাকেন। এখানে ধোত্রে নামের খুব সুন্দর একটা গ্রাম রয়েছে। যে গ্রামের নাম হয়তো অনেকেই জানেন না। যদি আপনি পাহাড়ের কোনও অফবিট জায়গার খোঁজে থাকেন তাহলে কিন্তু চোখ বুজে চলে যান ধোত্রেতে। কীভাবে যাবেন? কোথায় থাকবেন? জেনে নিন।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৮৫০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত দার্জিলিং জেলার ছোট্ট এই পাহাড়ি গ্রাম ছবির মত সুন্দর। মানে ভঞ্জন থেকে ৪৫ মিনিটের রাস্তা পেরোলেই এই গ্রামে পৌঁছানো যায়। যারা সান্দাকফু-ফালুট ট্রেকিংয়ের উদ্দেশ্যে যান সেই পথে ধোত্রেও পড়ে। সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যানের মধ্যেই অবস্থিত এই গ্রাম। ক্রমশ এখানে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে।
কী কী দেখবেন?
সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যানের ঠিক মাঝে পাইন গাছের বনে ঘেরা ছবির মত ছোট্ট সুন্দর গ্রাম ধোত্রে। এই গ্রামে হাতে গোনা ৫০ টি বাড়ি রয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু হোম স্টেও রয়েছে। এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পারেন। আবার এখানকার ভিউ পয়েন্ট থেকে তুষারাবৃত কুম্ভকর্ণ, পানদিমের মত পর্বতের চূড়া দেখতে পাবেন।
ধোত্রেতে রয়েছে শিব মন্দির, মনাস্ট্রি, বায়োডাইভারসিটি হেরিটেজ সাইট। এখানকার জীব বৈচিত্র্য খুবই সুন্দর। উদ্ভিদ এবং প্রাণীর মধ্যে হরেক রকম বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়। এখানকার জঙ্গলে বিভিন্ন হিমালয়ান পাখি দেখা যায়। ফুলভেটাস, সানবার্ড, ওয়ারব্লার, ক্রসবিল, ম্যাগপাই, মিনলাস, থ্রাশস, ফ্লাইক্যাচারের মত ৬ থেকে ৮ রকম প্রজাতির পাখি দেখতে পাবেন।
সারা বছরই এখানে পাখির আনাগোনা লেগে থাকে। মরশুম ভিত্তিতে বেশ কিছু পাখি এখানে আসে। যেমন শীতকালে যখন তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি থেকে নিচে নেমে যায় তখন গোল্ড ক্রেস্ট, হিমালয়ান ব্লু টেইল, বিভিন্ন টিটস অ্যান্ড ফিঞ্চস, মেরুন ব্যাকড অ্যাকসেন্টর, রেড ভেন্টেড ইউহিনার মত পাখি দেখবেন। বসন্তকালে জঙ্গল লাল এবং গোলাপি রংয়ের রডোডেনড্রন ফুলে ভরে যায়। তখন ফায়ার টেইলড সানবার্ড, লিটল বান্টিং, গ্রিন টেইলড সানবার্ড, চেস্টনাট টেইলড মিনলা, হুইসলার ওয়ারব্লার, ব্যারেড ওয়ারব্লার, রুফাস সিবিয়ার মত পাখিদের দেখবেন।
আরও পড়ুন : বর্ষা উপভোগ করতে ঘুরে আসুন কালেজ ভ্যালি থেকে! কীভাবে যাবেন? কোথায় থাকবেন?
আরও পড়ুন : পাহাড়ের কোলে অফবিট গ্রাম! বর্ষায় উত্তরবঙ্গে বেড়ানোর জন্য সেরা এই জায়গা
কীভাবে যাবেন?
শিলিগুড়ি থেকে শেয়ার গাড়ি ভাড়া করে ধোত্রেতে পৌঁছতে পারেন। মাথাপিছু ৬০০ টাকা খরচ হবে। আবার মানেভঞ্জন, সুখিয়াপোখরি, রিমবিক, ঘুম থেকেও ধোত্রে যেতে পারবেন শেয়ার গাড়িতে। মাথাপিছু খরচ পড়বে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা।