কাপল কিংবা পরিবারের সঙ্গে নয়, বর্তমান প্রজন্ম একা ভ্রমণ করতেও বেশ পছন্দ করছেন এখন। পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে একা একা কাছে পিঠে বিভিন্ন ট্যুরে বেরিয়ে পড়ছেন সময় পেলেই। কোনও অজানা জায়গাতে নিজের ইচ্ছেমত স্বাধীনভাবে ঘোরার মজাটাই আলাদা। আজকের এই প্রতিবেদনে রইল সোলো ট্রিপের উপযুক্ত এমন কিছু জায়গার তালিকা। যদি আপনিও একা বেরোনোর পরিকল্পনা করেন তাহলে এই জায়গাগুলোর কথা ভাবতেই পারেন।
কালিম্পং
কী কী দেখবেন?
সোলো ট্রিপের জন্য পশ্চিমবঙ্গের এই পাহাড়ি শহর একেবারেই আদর্শ জায়গা। কালিম্পংয়ের আশেপাশে অনেক ছোট ছোট গ্রাম রয়েছে। রয়েছে অনেক হোমস্টে। এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার ভিউ খুব সুন্দর আসে। ছাঙ্গে ফলস, বিভিন্ন মনাস্ট্রি, নক দাঁড়া ভিউ পয়েন্ট, নার্সারী, পাহাড়, চার্চ ইত্যাদি দেখতে পারবেন।
কখন এবং কীভাবে যাবেন?
অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে কালিম্পং ঘুরতে গেলে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। এছাড়াও গোটা বছর যেতে পারেন। ট্রেনে গেলে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত যেতে হবে। তারপর সেখান থেকে মিনিবাস, বাস অথবা জিপে করে তিন ঘন্টায় পৌঁছে যাবেন কালিম্পং। এছাড়া বাসে করে শিলিগুড়ি পর্যন্ত গিয়ে তারপর সেখান থেকে ট্যাক্সি ভাড়া করে কালিম্পং যাওয়া যায়।
হৃষীকেশ
কী কী দেখবেন?
উত্তরাখণ্ডের হৃষীকেশ একই সঙ্গে অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী এবং আধ্যাত্মিক মানসিকতা সম্পন্ন মানুষদের টানে। হিমালয় এবং গঙ্গা নদী এখানকার প্রধান আকর্ষণ। সেই সঙ্গে রিভার রাফটিং, বাঞ্জি জাম্পিং, জায়ান্ট সুইমিংয়ের মত বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চারের অংশ হতে পারেন। ক্যাম্পিং করতে পারবেন। ট্রেকিং করতে পারেন। লাছমান ঝুলা, ত্রিবেণী ঘাটে ঘুরতে পারেন। সন্ধ্যার সময় গঙ্গা আরতি দেখতে পারেন।
কখন এবং কীভাবে যাবেন?
সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ মাসের মধ্যে হৃষীকেশ ঘুরে আসা যায়। সামনেই বর্ষা নামছে। এই সময় হৃষীকেশ ঘুরতে পারেন। কলকাতা এয়ারপোর্ট থেকে দেরাদুন হয়ে ফ্লাইটে যেতে পারেন। আবার ট্রেনেও যেতে পারেন। ট্রেনে যেতে সময় লাগবে ৪ ঘন্টা।
উদয়পুর
কী কী দেখবেন?
রাজস্থানের উদয়পুরে পাহাড়, হ্রদ ও রাজা-রাজড়াদের রাজপ্রাসাদ দেখতে পারেন। এখানে সিটি প্যালেস, পিছোলা হ্রদ, জগো মন্দির, পুরানি হাভেলি দেখতে পারবেন। রাজস্থানী লোকসংগীত, নাচ, গান উপভোগ করতে পারবেন।
কখন যাবেন কীভাবে যাবেন?
রাজস্থান যাওয়ার আদর্শ সময় হল অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস। এপ্রিল থেকে জুলাই মাস বাদে অন্য যেকোনও সময় রাজস্থান যাওয়াই ভাল। কলকাতা থেকে ট্রেনে উদয়পুর যেতে ৩৬ ঘন্টা সময় লাগে। বিমানে যেতে সময় লাগে ৫ ঘন্টা।
ভারকালা
কী কী দেখবেন?
কেরালার ভারকালা সমুদ্র সৈকতেও ঘুরতে পারেন। এখানকার সবুজ গাছপালায় ঘেরা টিলা, নারকেল গাছ, সমুদ্রের সাদা ফেনা অপরূপ স্বর্গরাজ্য তৈরি করে। এখানে আয়ুর্বেদিক ম্যাসাজ নিতে পারবেন স্থানীয়দের থেকে।
কখন যাবেন কীভাবে যাবেন?
বেড়ানোর জন্য উপযুক্ত সময় হল নভেম্বর থেকে মার্চ মাস। কলকাতা থেকে কেরালা যাওয়া যায় ট্রেনে করে। যাতায়াতের সময় লাগবে প্রায় দুদিন। আবার চাইলে বিমানে করেও যাওয়া যায়। এখন ভারতীয় রেল সপ্তাহে একদিন শালিমার থেকে ভারকালা পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন চালায়। যাতায়াতের সময় লাগে ৪২ ঘণ্টা ৩৯ মিনিট।
আরও পড়ুন : এক ধাক্কায় কমে গেল সিকিম ঘোরার খরচ, জলের দরে ঘুরে আসুন গ্যাংটক
ম্যাকলিয়ডগঞ্জ
কী কী দেখবেন?
হিমাচল প্রদেশের এই জায়গায় থাকার জন্য অনেক হোস্টেল পাবেন। এখানে ট্রেকিং করা যায়। সারা বছরই প্রায় পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। এখানে দেখার মধ্যে রয়েছে পাহাড়, দলাই লামার মন্দির, বৌদ্ধমঠ এবং তিব্বতি খাবারের মজা নিতে পারেন।
আরও পড়ুন : কাশ্মীরে বেড়াতে গেলে কোন কোন জায়গা অবশ্যই যাবেন? দেখে নিন তালিকা
কখন যাবেন কীভাবে যাবেন?
মার্চ থেকে জুন মাস এবং সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাস এখানে যাওয়ার জন্য উপযুক্ত। কলকাতা থেকে অমৃতসর পর্যন্ত বিমানে গিয়ে তারপর সেখান থেকে ট্যাক্সি ধরে ৭ ঘন্টায় পৌঁছে যাওয়া যায়। হাওড়া থেকে ট্রেনে করেও যাওয়া যাবে।