Kalighat Temple : অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দিরের আদলে এবার পশ্চিমবঙ্গের কালীঘাট মন্দিরও সেজে উঠলো সোনার সাজে। কলকাতার কালীঘাট মন্দিরের চূড়া যে সোনা দিয়ে মুড়ে ফেলা হবে তা আগেই জানিয়েছিল প্রশাসন। এবার তা বাস্তবায়িত হল। প্রায় ৫০ কেজি সোনা দিয়ে মুড়ে ফেলা হল কালীঘাট মন্দিরের তিনটি চূড়া। এর জন্য কত খরচ পড়লো?
কালীঘাট মন্দিরের ইতিহাস
৫১ সতীপিঠের অন্যতম হল কলকাতার প্রসিদ্ধ এই কালী মন্দির। এখানে মা দক্ষিণা কালী ও মহাদেব নকুলেশ্বর রূপে পূজিত হন। কথিত আছে বাবা প্রজাপতি দক্ষের গৃহে স্বামী শিবের নিন্দা সইতে না পেরে সতী যজ্ঞ কুন্ডে আত্মাহুতি দেন। মহাদেব খুবই রুষ্ট হয়ে সতীর দেহ কাঁধে নিয়ে তান্ডব নৃত্য শুরু করেন। তাকে শান্ত করার জন্য বিষ্ণু নিজের সুদর্শন চক্র দিয়ে সতীর দেহ ৫১ টি খন্ডে ভাগ করে দেন।
সতীর দেহের খন্ডগুলি পৃথিবীতে পড়া মাত্রই পাথরে পরিণত হয়। এক একটি খন্ড যেখানে যেখানে পড়েছে সেখানেই গড়ে উঠেছে এক একটি সতীপীঠ। ভক্তরা মন্দির গড়ে পূজার্চনা করে চলেছেন বছরের পর বছর ধরে। কালীঘাটে সতীর ডান পায়ের চারটি আঙ্গুল পড়েছিল। ১৮০৯ সালে বড়িশার সাবর্ণ জমিদার শিবদাস চৌধুরী, তার ছেলে রামলাল এবং ভাইপো লক্ষীকান্ত আদি গঙ্গার তীরে কালীঘাটের বর্তমান মন্দির নির্মাণ করেন।
নতুন করে সংস্কার হল কালীঘাট মন্দিরের
প্রায় ২০০ বছর পর কালীঘাট মন্দিরের সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। রিলায়েন্স গোষ্ঠীর তত্ত্বাবধানে কালীঘাটের গর্ভ গৃহ, ভোগের ঘর, নাট মন্দির, প্রধান মন্দির, বলির জায়গায় সংস্কার চালানো হচ্ছে। কালীঘাট মন্দিরের সংস্কারের সব থেকে আকর্ষণীয় বিষয়বস্তু হল সোনায় মোড়া মন্দিরের তিনটি চূড়া। ২৪ ক্যারেটের সোনা দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে এই তিনটি চূড়া।
কালীঘাট মন্দিরের চূড়ায় সোনা বসাতে কত খরচ পড়লো?
কালীঘাটের এই তিনটি চূড়া আগে মাটির ছিল। মূল কাঠামো অটুট রেখেই বাইরে থেকে চূড়ার উপর সোনা বসানো হয়েছে। এতে ৫০ কেজি সোনা লেগেছে। বর্তমান সোনার বাজার দরের হিসেবে এতে প্রায় ৩০ কোটি টাকার বেশি খরচ হওয়ার কথা।
উল্লেখ্য, শুধু কালীঘাট মন্দির নয়, এর আগে আসামের কামাখ্যা মন্দিরের চূড়াতেও সোনা বসেছে। সকালে সূর্যের আলো পড়লেই ঝলমল করে ওঠে মন্দির চত্বর। সেদিকে নজর পড়লে চোখ সরবে না। প্রত্যেকদিন দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসেন কালীঘাট মন্দিরে পুজো দিতে। সংস্কারের পর মন্দিরের নতুন রূপ তাদের চোখ ধাঁধিয়ে দিচ্ছে।