দীঘা, পুরী, দার্জিলিং, বাঙালির ভ্রমণস্থানের মধ্যে বরাবরই অগ্রাধিকার পেয়েছে এই তিনটি জায়গা। তবে যেখানেই ঘুরতে যান না কেন সেখানকার কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম আপনাকে মানতেই হবে। অন্যথায় স্থানীয়দের বিরাগভাজন হতে হবে। বিশেষ করে পুরীতে এরকম বেশ কিছু নিয়মকানুন রয়েছে যেগুলো না মানলেই আপনাকে বিপদে পড়তে পারে। তাই পরেরবার পুরী যাওয়ার আগে এই বিষয়গুলো অবশ্যই মাথায় রাখবেন।
ভাষা নিয়ে সাবধান
উড়িষ্যাতে অবস্থিত পুরী। এখানকার বাসিন্দারা তাই উড়িয়া ভাষাতে কথা বলেন। তবে পুরীতে যেহেতু বাঙালিদের ভিড় লেগে থাকে তাই স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে অনেকেই বাংলা ভাষাতেও সড়গড়। কিন্তু নিজেদের ভাষার প্রতি তাদের অমোঘ শ্রদ্ধা রয়েছে। ভালোভাবে উড়িয়া না জানলে আপনি কিন্তু ভুলেও তাদের ভাষাতে কথা বলতে যাবেন না। কারণ ভুল উড়িয়া বললে তারা উল্টে রেগে যেতে পারেন।
পুজো দেবেন কীভাবে?
মন্দিরের শহর পুরী। এখানে মূল জগন্নাথ মন্দির তো রয়েইছে। সেই সঙ্গে আনাচে কানাচে আরও অসংখ্য মন্দির রয়েছে। আপনি যদি মন্দিরে পুজো দিতে চান তাহলে পান্ডাদের কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতে হবে। প্রণামীও দিতে হতে পারে পাণ্ডাদের চাহিদা মত। তাদের সঙ্গে অকারণে বিবাদে জড়াবেন না।
অযথা ঝামেলায় জড়াবেন না
আপনি মন্দিরে ভ্রমণ করুন কিংবা পুজো দিন, মন্দির কর্তৃপক্ষ, পুরোহিত কিংবা পান্ডাদের সঙ্গে ভুলেও তর্কাতর্কিতে যাবেন না। আপনার কাছে প্রণামী চাওয়া হলে ইচ্ছে হলে দেবেন। নয়তো না দিয়ে চলে যেতে পারেন। কিন্তু এই নিয়ে ঝগড়া বাঁধিয়ে বসবেন না। শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবেন। প্রয়োজনে ক্ষমা চেয়ে নেবেন।
মদ্যপান হইতে সাবধান
পুরীতে ঘুরতে গিয়ে আপনি হোটেল রুমে বসে কিংবা হলিডে হোমের ভেতরে যত খুশি মদ্যপান করতে পারেন। কিন্তু পুরীর সমুদ্র সৈকতে খোলামেলাভাবে মদ্য পান করা যাবে না। আইনি ঝামেলায় জড়িয়ে আপনার জেল পর্যন্ত হতে পারে।
খাবারের দাম জানুন
অনেকের ধারণা পুরীতে খাবার নাকি সস্তা। এটা কিন্তু একেবারেই ভুল। পুরীতে যে হোটেলেই খাবার খান না কেন, মেনু ঠিক করার সময় দাম জেনে নেবেন। পুরীর বিভিন্ন হোটেলে বাঙালি খাবার পাওয়া যায়। তবে সেগুলোর দাম খুব একটা কম হয় না।
স্ট্রিট ফুড থেকে সাবধান
পুরীর সমুদ্র সৈকতের ধারে অসংখ্য ছোট ছোট খাবারের স্টল থাকে। যেখানে বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ ও কাঁকড়ার হরেক রকমের খাবার পাওয়া যায়। ঘুরতে গিয়ে এসব খাবার না খাওয়াই ভাল। কারণ অনেকের এলার্জি থাকে। এসব খাবারে পেট খারাপও হতে পারে।
কেনাকাটা কোথায় করবেন?
পুরীতে গিয়ে শপিংয়ের ইচ্ছে হলে বড় কোনও দোকানে শপিং করুন। ছোট ছোট দোকানে জিনিস ভালো হলেও অনেক সময় দাম বেশি নিয়ে নিতে পারে। সেক্ষেত্রে দরদাম করে নিতে হবে অবশ্যই। উড়িষ্যা সরকারের বিশেষ বিপনীও রয়েছে বাজারে। সেখান থেকেও কেনাকাটা করতে পারেন।
আরও পড়ুন : ভারতের সবথেকে সুখী রাজ্য কোনটি ও কেন? তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের স্থান কত?
যাতায়াত করবেন কীভাবে?
পুরীতে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ভ্রমণের জন্য রিকশা করে যাতায়াত করতে হয়। রিকশাভাড়া এখানে খুবই বেশি। তাই কোথাও যাওয়ার আগে রিকশা ভাড়ার বিষয়টা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।
আরও পড়ুন : ১৬ ঘন্টা নয়, এবার মাত্র ২ ঘন্টায় পৌঁছে যাবেন সিকিম, খুলে গেল নতুন রাস্তা
যেখানে সেখানে প্রস্রাব করবেন না
পুরী একটি দর্শনীয় স্থান। তার থেকেও বড় কথা এটা মন্দিরের শহর। পুরীতে রাস্তায়, সমুদ্র সৈকতে কিংবা সমুদ্রে প্রস্রাব করা যায় না। এমন কি কোনও হোটেল বা বাড়ির দেওয়ালের গায়েও প্রস্রাব করতে যাবেন না। কারণ দেওয়ালের ওপারে হতে পারে সেখানে একটি মন্দির রয়েছে। এই অভ্যাসের কারণে বহু পর্যটককে ঝামেলায় পড়তে হয় হামেশাই।