টাইম ট্রাভেল নিয়ে বরাবরই সাধারণ মানুষের মনে কৌতুহল কাজ করে। জীবনে অন্তত প্রত্যেকেরই কোনও না কোনও সময় মনে হয়েছে অতীতের ভুলগুলোকে যদি এখন পাল্টানো সম্ভব হত টাইম ট্রাভেল করে তাহলে জীবনটা আজ অন্যরকম হত। টাইম ট্রাভেল নিয়ে বিভিন্ন সিনেমা কিংবা গল্প রয়েছে। আবার বাস্তবেও কখনও কখনও কেউ কেউ টাইম ট্রাভেল করেছেন এরকম দাবীও করেছেন। কিন্তু সত্যিই কি বাস্তবে টাইম ট্রাভেল সম্ভব? কী বলছেন বিজ্ঞানীরা?
বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন টাইম ট্রাভেল সম্পর্কে বলেছিলেন কোনও বস্তু যদি আলোর গতিবেগকে টেক্কা দিতে পারে তবেই ভবিষ্যতে যাওয়া সম্ভব। অর্থাৎ তার বক্তব্য অনুসারে টাইম ট্রাভেল করে শুধু ভবিষ্যতেই যাওয়া সম্ভব। অতীতে যাওয়া যায় না। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা টাইম ট্রাভেল নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে কোয়ান্টাম এনট্যাঙ্গলমেন্ট ব্যবহার করে একটি এক্সপেরিমেন্ট করেছেন। এর থেকে নতুন কিছু জানা গিয়েছে।
কোয়ান্টাম এনট্যাঙ্গলমেন্ট, এই ধারণার দেখা মিলেছিল ২০১৮ সালের সিনেমা ‘অ্যান্ট ম্যান অ্যান্ড দ্য ওয়াস্প’তে। কোয়ান্টাম এনট্যাঙ্গলমেন্ট বলতে বোঝায় দুই বা তার বেশি কোয়ান্টাম কণার বৈশিষ্ট্য যখন একে অপরের দ্বারা নির্ধারিত হয়। দুই বা তার বেশি কণার এনট্যাঙ্গলমেন্ট যেহেতু একই কোয়ান্টাম স্তরে ঘটছে তাই তাদের শারীরিক দূরত্ব মিথস্ক্রিয়াতে প্রভাব ফেলে না।
সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা ক্লোজড টাইম লাইক কার্ভস নামের একটি সম্ভাব্য টাইম ট্রাভেলিং নিয়ে গবেষণা করেছেন। এই কার্ভ যে কণা দ্বারা তৈরি সেটা পেছনের দিকে চলে। এই কোয়ান্টাম ইন্টারাকশনের ফলে ফোটনিক প্রোব সম্পর্কে জানা গিয়েছে। কোয়ান্টাম অপারেশনের ফলে কোন ইনপুট সব থেকে ভালো ফলাফল করবে তা নির্ধারণ করা যাবে। এর ফলে বিজ্ঞানীরা এনট্যাঙ্গলমেন্টের মাধ্যমে কোয়ান্টাম প্রোবের সামঞ্জস্য করতে পারবেন।
অবশ্য বিজ্ঞানীদের দাবি টাইম ট্রাভেল ইফেক্ট প্রত্যেক চারবারে কেবল একবার সফল হতে পারে। অর্থাৎ এর ব্যর্থতার হার ৭৫ শতাংশ। এই ব্যর্থতার হার কম করার জন্য বিজ্ঞানীরা প্রচুর পরিমাণে এনট্যাঙ্গল ফোটন এবং একটি ফিল্টার ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছেন।
আরও পড়ুন : ভারতের একমাত্র ট্রেন যেটায় লাগেনা কোনও টিকিট, ৭৫ বছর ধরে বিনামূল্যে ভ্রমণ করছেন যাত্রীরা
আরও পড়ুন : বিশ্বের মানচিত্র থেকে সম্পূর্ণরূপে মুছে যাবে এই ৬ স্থান, ভারতের জন্যও রয়েছে অশনি সংকেত
এই গবেষণার প্রসঙ্গে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ান্টাম ফিজিসিস্ট এবং গবেষক ডেভিড আরভিডশন শুকুর বলেছেন, “আমরা যে পরীক্ষাটির বর্ণনা দিয়েছি, তা স্ট্যান্ডার্ড (কোয়ান্টাম নয়) পদার্থবিদ্যা দিয়ে সমাধান করা অসম্ভব বলে মনে হয়। যা সময়ের স্বাভাবিক গতিকে মেনে চলে। তাই এর থেকে মনে হয় যেন কোয়ান্টাম এনট্যাঙ্গলমেন্ট এমন উদাহরণ তৈরি করতে পারে, যা কার্যকর ভাবে টাইম ট্রাভেলের মতো দেখায়।”