একাধিক পুরনো রাজবাড়ি রয়েছে আমাদের এই বাংলায়। এখন অবশ্য সেই ২০০-৩০০ বছর আগের রাজা-রাজড়াদের তেমন জাঁকজমক নেই। তবে পুরনো রাজবাড়িগুলো ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে আজও। এখন বেশিরভাগ রাজবাড়িই পর্যটন স্থলে পরিণত হয়েছে। আজকের এই প্রতিবেদনে রইলো এমন দুই রাজবাড়ির ঠিকানা যেখানে আপনি রাজকীয় আতিথেয়তা পাবেন।
আমাদপুর জমিদার বাড়ি
বর্ধমানের মেমারি শহরের খুব কাছে অবস্থিত আমাদপুর গ্রাম। এই গ্রামেই রয়েছে আমাদপুর জমিদার বাড়ি। আমাদপুর জমিদার বংশের আসল উপাধি সেনশর্মা। চৌধুরী উপাধি এরা পেয়েছিলেন। এদের আদি পুরুষ শ্রীবৎস সেন শর্মার নাতি রাজা লক্ষণ সেনের সভাকবি ছিলেন। ১৬০০ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময় মুঘল সম্রাট শাহজাহানের ফরমানে এই পরিবার বর্ধমানের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের জমিদারি পেয়েছিল।
চৌধুরী উপাধি পাওয়ার পর এই জমিদার বংশের প্রতিপত্তি বাড়তে শুরু করে। পরে অবশ্য জমিদারি প্রথা অবলুপ্ত হয়ে যায়। তারপর জমিদার বংশের উত্তরসূরী শিলাদিত্য চৌধুরী বাড়ির একটা অংশ সংস্কার করে পর্যটকদের জন্য খুলে দেন। ৩৮৬ বছরের পুরনো এই বাড়িটিতে মেহগনি কাঠের আসবাব, ঝাড়বাতি, সাদাকালো ছবি দেখতে পাবেন। এখন এই জমিদার বাড়ি হেরিটেজ হোম স্টেতে পরিণত হয়েছে। এখানে থাকার জন্য আগে থেকে বুকিং করে যেতে হবে।
আরও পড়ুন : নামমাত্র খরচে হাউসবোটে রাত্রিবাস! বাংলার এই জায়গায় এলে কাশ্মীর ভুলে যাবেন
মহিষাদল রাজবাড়ি
পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল রাজবাড়ি খুবই জনপ্রিয়। হাওড়া থেকে মহিষাদল বা সতীশ সামন্ত হল্ট স্টেশনে নামতে হবে। তারপর সেখান থেকে টোটো করে মহিষাদল পৌঁছে যাওয়া যায়। রাজবাড়িতে ঢোকার জন্য ১০ টাকার টিকিট কাটতে হয়। তাম্রলিপ্ত রাজ পরিবারের এক অংশের সদস্যরা এখানে রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বীর নারায়ন রায়চৌধুরী ও তার বংশধর কল্যাণ রায়চৌধুরী খাজনা মেটাতে না পারায় সম্রাট আকবর তাদের জমিদারি কেড়ে নেন।
আরও পড়ুন : চীনা মিস্ত্রীরা ১২ বছর ধরে তৈরি করেছিলেন! ঘুরে আসুন পুরুলিয়ার এই রাজবাড়ি থেকে
আরও পড়ুন : ভারতের এই ৫ রাজবাড়িতে রাজার হালে থাকতে পারবেন আপনিও! জেনে নিন খরচ
মহিষাদল রাজবাড়ির দুটি অংশ। ফুলবাগ প্যালেস এবং রঙ্গিবাসান প্যালেস। মূল প্রাসাদটি হলো ফুলবাগ প্যালেস। এই প্যালেসকে সংস্কার করিয়ে পাঁচটি কক্ষকে মিউজিয়ামের রূপ দেওয়া হয়েছে। বৈঠকখানা, শিকার কক্ষ, অস্ত্রাগার খুলে দেওয়া হয়েছে পর্যটকদের জন্য। মিউজিয়াম সকাল দশটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত খোলা থাকে। রঙ্গিবাসান প্যালেসে রাধাগোবিন্দ জিউয়ের মন্দির রয়েছে। এখানে দুটি ঘর অতিথিশালা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। থাকতে গেলে বুকিং করে যেতে হবে।